ফারায়েজ বা ইসলামী উত্তরাধিকার আইন বিষয়ক বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন।
১। ইসলামী উত্তরাধিকার আইনে নারীর অধিকার ও ফারায়েয – মুহাম্মদ ফজলুর রহমান আশরাফী
২। ইসলামে নারীর অধিকার সেকেলে নাকি আধুনিক – ড. জাকির নায়েক
৩। ইসলামে নারীর উত্তরাধিকার – নুরুল ইসলাম
৪। ইসলামে উত্তরাধিকার আইন কতটা গাণিতিক ব্যবহারিক আইন
৫। ইসলামের উত্তরাধিকার আইন ও সাক্ষ্য আইন – মুহাম্মদ আব্দুর রহমান
৬। ফারায়েজ শিক্ষা – আবদুল আজীজ
৭। সম্পদে নারীর উত্তরাধিকারঃ ইসলামই দিয়েছে প্রাপ্তির নিশ্চয়তা – মুহাম্মদ আফীফ ফুরকান
ইসলামী উত্তরাধিকার আইন পরিচিতিঃ ইসলামে উত্তরাধিকার শাস্ত্রকে আরবিতে বলা হয় ‘ফারায়েজ’, যা ‘ফারিজাতুন’-এর বহুবচন। এর অর্থ হলো-নির্ধারিত অংশ, নির্দিষ্ট ভাগ, উত্তরাধিকার শাস্ত্র। পরিভাষায় ফারায়েজ হচ্ছে, ফিকহ ও হিসাবশাস্ত্রের ওই সব নিয়মকানুন জানার নাম, যার দ্বারা মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পদের বণ্টননীতি সম্পর্কে জানা যায়। এই জ্ঞানকে ‘ইলমুল ফারায়েজ’ বা উত্তরাধিকার শাস্ত্র বলা হয়। ইলমুল ফারায়েজ শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ফারায়েজ শিক্ষা করো এবং জনগণকে তা শিক্ষা দাও। কেননা এটা জ্ঞানের অর্ধেক।’ (আল-বাদরুল মুনির : ৭/১৮৬)
ইলমুল ফারায়েজকে জ্ঞানের অর্ধেক বলার অনেক কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে একটি কারণ হলো-ইসলামের অন্য বিষয়গুলো শরিয়তের চারটি দলিল তথা কুরআন, হাদিস, ইজমা ও কেয়াস থেকে নির্ধারিত হলেও ইলমুল ফারায়েজ শুধু দুটি দলিল তথা কুরআন ও হাদিস থেকে নির্ধারিত হয়েছে। ইলমুল ফারায়েজকে বাংলায় উত্তরাধিকার শাস্ত্র বা উত্তরাধিকার বিজ্ঞান বলা হয়।
ইলমুল ফারায়েজের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা হলো-‘আসহাবুল ফারায়েজ’ বা যাবিল ফুরুজ, ‘আসাবা’, ‘যাবিল আরহাম’। যাবিল ফুরুজ অর্থ হলো নির্ধারিত অংশের মালিকগণ। পরিভাষায় যাবিল ফুরুজ বলা হয় তাদেরকে, যাদের নির্ধারিত অংশের কথা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। যেমন-‘আল্লাহ তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে এই আদেশ দিয়েছেন যে, এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান। আর যদি শুধু কন্যাগণ দুই জনের অধিক হয়, তাহলে তারা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত হবে। আর যদি একটি মাত্র কন্যা হয়, তাহলে সে অর্ধেকাংশ প্রাপ্ত হবে। যদি মৃত ব্যক্তির কোনো সন্তান থাকে তাহলে মাতা-পিতার জন্য অর্থাৎ উভয়ের প্রত্যেকেরই জন্য তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে এক-ষষ্ঠাংশ রয়েছে। আর যদি তার কোনো সন্তান না থাকে এবং শুধু মাতা-পিতাই তার উত্তরাধিকারী হয়, তাহলে তার মাতার জন্য রয়েছে
এক-তৃতীয়াংশ এবং যদি তার ভাই থাকে তাহলে সে যা অসিয়ত করে গেছে সেই অসিয়ত ও ঋণ আদায়ের পর তার মাতার জন্য এক-ষষ্ঠাংশ। তোমাদের পিতা ও তোমাদের পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের অধিকতর উপকারী তা তোমরা জানো না। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত বিধান। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও বিজ্ঞানময়।’ (সুরা নিসা : ১১)
ইসলামের উত্তরাধিকার আইনের নির্ধারিত অংশপ্রাপ্তরা হলো মোট ১২ জন। তাদের মধ্যে চার জন পুরুষ এবং বাকি আট জন নারী। পুরুষ চার জন হলো-১. পিতা। ২. দাদা। ৩. বৈপিত্রেয় ভাই। ৪. স্বামী। আর আট জন নারী হলো-১. স্ত্রী। ২. কন্যা। ৩. পৌত্রী। ৪. সহোদরা বোন। ৫. বৈমাত্রেয় বোন। ৬. বৈপিত্রেয় বোন। ৭. মাতা। ৮. দাদি/নানি।
ইসলামের এই উত্তরাধিকার আইন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মুসলিম জাতির প্রতি এক বিশেষ রহমতস্বরূপ। কারণ নির্দিষ্ট উত্তরাধিকার আইন না থাকলে মুসলমানদের মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে তারা দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতো। তাই ইলমুল ফারায়েজের জ্ঞান অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা রাসুল (সা.) একে জ্ঞানের অর্ধেক বলেছেন। পরকালে আল্লাহ চাইলে তার হক মাফ করবেন। কিন্তু মানুষের হক তিনি মাফ করবেন না। আর হাশরের কঠিন পরিস্থিতিতে কোনো মানুষেরই হকদারকে মাফ করার অবস্থা থাকবে না। তাই ফারায়েজ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করে বাস্তব জীবনে অনুশীলন করা জরুরি। আল্লাহ বোঝার ও আমল করার তওফিক দিন।
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ