![](https://www.islamicboisomahar.in/wp-content/uploads/2020/09/sofiuddin-sordar-books.jpg)
৩৮। সূর্যাস্ত
লেখক পরিচিতিঃ
১৯৩৫ সালের ১ মে নাটোর সদর উপজেলার হাটবিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঐতিহাসিক ও সামাজিক উপন্যাস, শিশু সাহিত্য, নাটক, রম্য রচনা, কল্প কাহিনীসহ শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি ১৯৫০ সালে মেট্রিকুলেশন পাশ করার পর রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে আইএ, বিএ অনার্স এবং এমএ ডিগ্রী লাভ করেন। পরে তিনি লন্ডন থেকে ডিপ্লোমা-ইন-এডুকেশন ডিগ্রী লাভ করেন। নিজ গ্রামের স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে তিনি একে একে রাজশাহী সরকারী কলেজ ও রাজশাহীর সারদা ক্যাডেট কলেজে অধ্যাপনা এবং বানেশ্বর কলেজ ও নাটোর রাণী ভবাণী সরকারী মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।
১৯৮২ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবেও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। পেশায় শিক্ষক ও পরে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হলেও এক সময় যাত্রাসহ মঞ্চ নাটকে দাপুটে অভিনেতাও ছিলেন তিনি। জীবনের বেশির ভাগ সময় শিক্ষকতা ও লেখালেখিতে পার করলেও এক সময় যাত্রাসহ মঞ্চ নাটকে দাপুটে অভিনেতাও ছিলেন তিনি।তার রচিত প্রথম সামাজিক উপন্যাস চলনবিলের পদাবলি দেশের কোন প্রকাশনা সংস্থা প্রকাশ না করায় তিনি আজীবন ঐতিহাসিক ও সামাজিক উপন্যাস রচনার সিন্ধান্ত নেন। সেই থেকে তিনি একে একে রচনা করেন রূপনগরের বন্দী, বখতিয়ারের তালোয়ার, গৌড় থেকে সোনারগাঁ, যায় বেলা অবেলায়, বিদ্রোহী জাতক, বার পাইকার দূর্গ, রাজ বিহঙ্গ, শেষ প্রহরী, বারো ভূঁইয়া উপাখ্যান, প্রেম ও পূর্ণিমা, বিপন্ন প্রহর, সূর্যাস্ত, পথহারা পাখি, বৈরী বসতী, অন্তরে প্রান্তরে, দাবানল, ঠিকানা, ঝড়মুখো ঘর, অবৈধ অরণ্য, দখল, রোহিণী নদীর তীরে ও ঈমানদার এর মতো জনপ্রিয় ঐতিহাসিক উপন্যাস।
এ ছাড়াও অপূর্ব অপেরা, শীত বসন্তের গীত, পাষানী, দুপুরের পর, রাজ্য ও রাজকন্যারা, থার্ড পন্ডিত, মুসাফির, ও গুনাগার নামে বেশ কয়েকটি সামাজিক উপন্যাস খুবই উপভোগ্য। তার রচিত ভ্রমণ কাহিনীর মধ্যে ‘সুদূর মক্কা মদীনার পথে’ উল্লেখযোগ্য। কল্পকাহিনী- সুলতানার দেহরক্ষী, রম্য রচনা- রাম ছাগলের আব্বাজান, চার চাঁন্দের কেচ্ছা ও অমরত্বের সন্ধানে উল্লেখযোগ্য।
শিশু সাহিত্য ভূতের মেয়ে লীলাবতী, পরীরাজ্যের রাজকন্যা ও রাজার মেয়ে কবিরাজ উল্লেখযোগ্য। কবি আল মাহমুদের ভাষায় ‘শফীউদ্দিন সরদার বাংলাদেশের সমকালীন সাহিত্যে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। যিনি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী মুসলিম বীরত্বগাঁথার মহান উপস্থাপক। তিনি আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কথাশিল্পী। আমি উপন্যাসিক শিল্পীর একজন ভক্ত’। কবি আল মাহমুদের পছন্দের এই কথাশিল্পী রাষ্ট্রীয়ভাবে তার কর্মের কোনো স্বীকৃতি না পেয়েই তিনি ৮৪ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। যদিও তিনি স্বীকৃতির জন্য কখনোই ললায়িত ছিলেন না। এই মহান মানুষটির মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে নাটোরের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।