
শফীউদ্দীন সরদার কর্তৃক রচিত pdf উপন্যাস ডাউনলোড করতে নিচে নামের উপর ক্লিক করুন।
১। অন্তরে প্রান্তরে
২। অপূর্ব অপেরা
৩। অবৈধ অরণ্য
৪। আওয়ারা
৫। ঈমানদার
৬। খোঁজ
৭। গুনাহগার
৮। গৌড় থেকে সোনার গাঁ
৯। চলন বিলের পদাবলী
১০। চার চান্দের কেচ্ছা
১১। ঝড়মুখী ঘর
১২। ঠিকানা
১৩। থার্ড পন্ডিত
১৪। দখল
১৫। দিঘলীতলার কান্না
১৬। দেশপ্রেম
১৭। দ্বীপান্তরের বৃত্তান্ত
১৮। পথহারা পাখী
১৯। পরীরাজ্যের রাজকণ্যা
২০। প্রেম ও পূর্ণিমা
২১। বখতিয়ারের তিন ইয়ার
২২। বখতিয়ারের তোলয়ার
২৩। বিদ্রোহী জাতক
২৪। বিপন্ন প্রহর
২৫। বুড়ির ঘুড়ি
২৬। বৈরী বসতি
২৭। ভূতের মেয়ে লীলাবতী
২৮। মুসাফির
২৯। যাদুর বাঁশী
৩০। যায় বেলা অবেলায়
৩১। রাজনন্দিনী
৩২। রাজবিহঙ্গ
৩৩। রাজার ছেলে কবিরাজ
৩৪। রাজ্য ও রাজকন্যারা
৩৫। রূপনগরের বন্দী
৩৬। রোহিনী নদীর তীরে
৩৭। শেষ প্রহরী
৩৮। সূর্যাস্ত
লেখক পরিচিতিঃ শফীউদ্দীন সরদার বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য লেখক, যিনি ঐতিহাসিক উপন্যাস, সামাজিক গল্প, শিশু সাহিত্য, রম্যরচনা, নাটক এবং কল্পবিজ্ঞানসহ নানা শাখায় সাহিত্য রচনা করেছেন। তার লেখা মুসলিম ঐতিহ্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতিচিত্র তুলে ধরে, যা পাঠকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে।
জন্ম ও শিক্ষাজীবনঃ শফীউদ্দীন সরদার ১৯৩৫ সালের ১ মে বাংলাদেশের নাটোর জেলার হাটবিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় নিজ গ্রামে। ১৯৫০ সালে তিনি মেট্রিক পাস করেন। এরপর তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট (আইএ) এবং স্নাতক (বিএ অনার্স) সম্পন্ন করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর (এমএ) ডিগ্রি অর্জন করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি লন্ডনে যান এবং সেখানে ডিপ্লোমা-ইন-এডুকেশন ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবনঃ তিনি কর্মজীবন শুরু করেন নিজ গ্রামের স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে। পরে রাজশাহী সরকারি কলেজ, রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ, বানেশ্বর কলেজ, এবং নাটোর রাণী ভবাণী সরকারি মহিলা কলেজে অধ্যাপনা ও অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তার শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং সাহিত্যচর্চা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিপুল প্রভাব বিস্তার করেছিল।
সাহিত্যকর্ম ও রচনার ধারাঃ শফীউদ্দীন সরদার মূলত ঐতিহাসিক উপন্যাসের জন্য বিখ্যাত। তার লেখায় মুসলিম ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে। ইতিহাসনির্ভর উপন্যাসগুলোর মাধ্যমে তিনি পাঠকদের কাছে বাংলার মুসলিম ঐতিহ্য তুলে ধরেন। তার রচনাগুলোর মধ্যে ইসলামি সভ্যতা, বাংলার সুলতানি ও মোগল আমল, যুদ্ধ, দেশপ্রেম, বীরত্বগাঁথা ইত্যাদি বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ
ঐতিহাসিক উপন্যাস:
১. বখতিয়ারের তলোয়ার – বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনা ও বখতিয়ার খলজির বীরত্বপূর্ণ কাহিনি।
২. গৌড় থেকে সোনার গাঁ – বাংলার মুসলিম শাসন ও সংস্কৃতির বিবর্তন।
3. বার পাইকার দুর্গ – ঐতিহাসিক এক দুর্গ ও তার রক্ষাকর্তাদের নিয়ে উপন্যাস।
৪. বখতিয়ারের তিন ইয়ার – বখতিয়ার খলজির তিন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর জীবন কাহিনি।
সামাজিক উপন্যাস ও অন্যান্য রচনা:
৫. যায় বেলা অবেলায় – এক সাধারণ মানুষের জীবনসংগ্রাম ও সামাজিক বাস্তবতা।
৬. সূর্যাস্ত – সমাজের পরিবর্তন ও মানুষের মনস্তত্ত্ব নিয়ে লেখা উপন্যাস।
৭. দিঘলীতলার কান্না – সমাজের নানা বৈষম্য ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লেখা।
৮. ঈমানদার – এক সত্যনিষ্ঠ মানুষের আত্মত্যাগ ও বিশ্বাসের গল্প।
তার লেখার বৈশিষ্ট্য
ঐতিহাসিক প্রামাণ্যতা: তার রচনাগুলোর মধ্যে ইতিহাসের সত্যনিষ্ঠ উপস্থাপনা দেখা যায়।
ইসলামি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি: তার লেখাগুলো মুসলিম শাসন, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও বীরত্বগাঁথার উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে।
প্রাঞ্জল ভাষা ও কাহিনির গভীরতা: তার লেখনী সহজবোধ্য হলেও গভীর অর্থবহ।
দেশপ্রেম ও বীরত্বের চিত্রায়ণ: ইতিহাসের বীর চরিত্রগুলোর মাধ্যমে তিনি পাঠকদের অনুপ্রাণিত করেন।
ব্যক্তিগত জীবন ও মৃত্যুবরণঃ অবসর জীবনে তিনি নাটোর শহরের শুকুলপট্টিতে বসবাস করতেন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাসপ্রেমী পাঠকদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
উপসংহারঃ শফীউদ্দীন সরদার ছিলেন একজন গুণী সাহিত্যিক, যিনি ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে অবলম্বন করে সাহিত্য রচনা করেছেন। তার উপন্যাসগুলো শুধু বিনোদন নয়, বরং পাঠকদের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করে এবং গর্ববোধ করায়। তার সাহিত্যকর্ম আগামী প্রজন্মের জন্য মূল্যবান সম্পদ হিসেবে টিকে থাকবে।
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ