ঈমান বিষয়ক বই: Bengali books on faith pdf

ঈমান পরিচিত

ঈমান পরিচিতঃ একজন ব্যক্তিকে মুসলিম হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম ঈমানদার হতে হবে। ইসলামের পাঁচটি অন্যতম স্তম্ভের মাঝে ঈমানের স্থান প্রথমে। কোনো ব্যক্তি ঈমানবিহীন যতই আমল করুক না কেন, সেই আমলে কোনো লাভ হবে না। বরং চিরস্থায়ী পরকালের জীবনীতে তাকে ভয়াবহ জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হওয়া লাগবেই। তাই ঈমানকে ইসলামের মূল খুঁটি বললে অত্যুক্তি হবে না।

ঈমানের আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ

ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিশ্বাস, যা ভীতি ও সন্দেহের বিপরীত। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, একটি সন্তান যেমন তার মা-বাবার কাছে নিরাপদ। তদ্রুপ বান্দা ঈমান আনার পরে আল্লাহর জিম্মায় ভরসা করে নিরাপদ থাকে। এর পারিভাষিক অর্থ হলো হৃদয়ে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কাজে বাস্তবায়নের নাম হলো ঈমান। যা আনুগত্যে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং গুনাহ গ্রাসপ্রাপ্ত হয়। ঈমান হলো মূল এবং আমল হলো শাখা।

ঈমানের ছয়টি স্তম্ভ

• একক ইলাহ হিসেবে আল্লাহকে বিশ্বাস করা।
• আল্লাহর ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস করা।
• সব আসমানি কিতাবে বিশ্বাস।
• সব নবী ও রাসুলের প্রতি বিশ্বাস।
• তাকদির বা ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস।
• আখিরাত বা পরকালের প্রতি বিশ্বাস।

কোনো ব্যক্তি যদি এই ছয়টি বিষয়ের ওপর ঈমান আনয়ন না করে, তাহলে সে কোনো রূপেই মুসলিম হিসেবে গণ্য হবে না। অথবা কেউ যদি বলে আমি পাঁচটির ওপর ঈমান আনয়ন করলাম কিন্তু একটির ওপর নয়, তবুও তিনি ঈমানদার হিসেবে বিবেচিত হবেন না।

কোরআন ও হাদিসে ঈমান

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন— রাসুল তাঁর প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তিনি বিশ্বাস স্থাপন করেছেন এবং বিশ্বাসিরাও; সবাই আল্লাহতে, তাঁর ফেরেশতাদের, কিতাবগুলোতে এবং রাসুলদের বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং বলেন, “আমরা তাদের কোনো একটিকে অন্যটির সাথে পার্থক্য করি না।” প্রকৃত ঈমানদাররা কোনোরূপ সন্দেহে বিলীন হয় না, প্রশ্নবিহীনভাবে আল্লাহ ও ঈমানের অন্যান্য বিষয়গুলি গ্রহণ করে।

ঈমান সম্পর্কে সহজ ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাসুল (সা.)— হজরত আবู উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন: “ঈমান হলো যখন তোমার ভালো কাজ তোমাকে আনন্দিত করবে আর খারাপ কাজ তোমাকে কষ্ট দেয় (অনুতপ্ত করবে)।” এবং গোনাহ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে বলেছেন: “যখন তোমার হৃদয়ে কোনো বিষয় সংশয় সৃষ্টি করে, তখন তা তুমি ত্যাগ করো।” (হাদিসে উল্লেখিত)

অন্য এক হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, ‘ঈমানদার ব্যক্তির দৃষ্টান্ত হলো খুঁটিতে বাঁধা আঠালো ঘোড়ার মতো — ঘোড়া চারদিকে ঘুরে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুঁটির দিকে ফিরে আসে। অনুরূপভাবে ঈমানদারও ভুল করে; শেষপর্যন্ত সে ঈমানের পথে ফিরে আসে।’

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায়, ঈমানদার ব্যক্তি নিশ্চিন্তে একমাত্র আল্লাহ ও অন্যান্য ঈমানীয় বিষয়গুলোর ওপর বিশ্বাস রেখে ইসলামের বিধান মেনে চলবে। আল্লাহ আমাদের সঠিক ঈমানদার হওয়ার তাওফিক দান করুন।