📜 তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন — মুফতি মুহাম্মদ শফী রচিত কুরআনের সহজবোধ্য ও চিন্তাশীল ব্যাখ্যা
রচয়িতা: মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ.)

“মাআরিফুল কুরআন” — বিশিষ্ট ইসলামী পণ্ডিত মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ.) রচিত একটি সুপরিচিত ও গ্রহণযোগ্য কুরআন তাফসীর গ্রন্থ, যা দীর্ঘ গবেষণা, অভিজ্ঞতা ও আলেম সমাজের ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংকলিত। মূলত উর্দু ভাষায় লিখিত এই ব্যাখ্যাটি পরবর্তীকালে বিশ্বের বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে, যার মধ্যে বাংলা অনুবাদটি বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এটি এমনভাবে সংকলিত হয়েছে, যাতে সাধারণ পাঠক, ছাত্র, গবেষক ও আলেম—সব শ্রেণির পাঠকের জন্য সহজবোধ্য এবং চিন্তাশীল হয়। প্রতিটি আয়াতের ভাষাগত ব্যাখ্যা, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও ব্যবহারিক শিক্ষা গভীরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, যা কুরআন বোঝার ক্ষেত্রে একটি বিশাল দিকনির্দেশনা।
রচনার ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট
১৯৫৪ সালে মুফতি শফী (রহ.)-কে রেডিও পাকিস্তান থেকে “পবিত্র কুরআনের নির্বাচিত আয়াতসমূহ ব্যাখ্যা” করার আমন্ত্রণ জানানো হয়। তিনি এই শর্তে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন যে, তিনি কোনো পারিশ্রমিক নেবেন না এবং তার বক্তব্য কোনো প্রকার সম্পাদনা ছাড়াই সম্প্রচারিত হবে। এই ধারাবাহিক অনুষ্ঠানটির নাম রাখা হয় *“মাআরিফুল কুরআন”* এবং প্রতি শুক্রবার সকালে এটি সম্প্রচারিত হতো। দশ বছরব্যাপী এই বক্তৃতা ১৯৬৪ সালে কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু শ্রোতাদের অনুরোধে মুফতি শফী (রহ.) নিজেই সেই লেকচারগুলো সম্পাদনা করে বই আকারে সংকলন শুরু করেন এবং ১৯৭৪ সালের মধ্যে পুরো তাফসীর সম্পন্ন করেন।
ঐতিহাসিক পটভূমি: “এটি কেবল তাফসীর নয়—একটি হৃদয়গ্রাহী চিন্তাশীল দাওয়াতি প্রবন্ধ, যা আধুনিক পাঠকের মানসিকতা ও জীবনের বাস্তবতার সাথে কুরআনের দিকনির্দেশনাকে মিলিয়ে দেয়।”
গ্রন্থের বিষয়বস্তু ও বিন্যাস
মাআরিফুল কুরআন মোট **৮ খণ্ডে** বিভক্ত, যেখানে সূরা আল-ফাতিহা থেকে সূরা আন-নাস পর্যন্ত পূর্ণ কুরআনের ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি খণ্ডে আয়াতভিত্তিক অনুবাদ, শানে নুযুল, ভাষাগত বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা স্থান পেয়েছে।
এই তাফসীরের মূল বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে:
- ওহি, নাযিলের প্রেক্ষাপট এবং শানে নুযুলের গুরুত্ব।
- ফিকহ, আকীদাহ ও সমাজজীবনে কুরআনের ব্যবহারিক প্রয়োগ।
- আধুনিক যুগে কুরআনের আদেশ-নিষেধের প্রাসঙ্গিকতা।
- তাফসীরের পদ্ধতি, আরবি ভাষার প্রভাব ও ব্যাকরণগত বিশ্লেষণ।
তাফসীরের মূল বৈশিষ্ট্য
লেখক বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন যে, এটি সহজবোধ্য ভাষা ও পরিমিত ব্যাখ্যা দ্বারা সমৃদ্ধ। এতে হাদীস, ফিকহ ও ইতিহাসের সমন্বিত ব্যাখ্যা রয়েছে।
- সহজবোধ্য ভাষা, অথচ গভীর বিশ্লেষণমূলক ব্যাখ্যা।
- তাফসীর আল-তাবারী, ইবনে কাসির, কুরতুবী প্রভৃতি গ্রন্থের নির্ভরযোগ্য উদ্ধৃতি।
- আধুনিক সমস্যার প্রেক্ষাপটে আয়াতের প্রয়োগ ব্যাখ্যা।
- প্রতিটি সূরার শেষে শিক্ষণীয় সারাংশ ও নৈতিক উপদেশ।
বৈশিষ্ট্য: “সহজবোধ্য ভাষা, অথচ গভীর বিশ্লেষণমূলক ব্যাখ্যা, যা হাদীস, ফিকহ ও ইতিহাসের সমন্বয়ে গঠিত।”
কেন পড়বেন এই গ্রন্থটি?
এই তাফসীর পাঠ করলে কুরআনের গভীর তাৎপর্য ও জীবনবোধ উপলব্ধি করা যায়। যারা কুরআন বোঝার পাশাপাশি তার বিধানকে জীবনে প্রয়োগ করতে চান, তাদের জন্য এটি অনন্য দিকনির্দেশনা।
- কুরআনের গভীর তাৎপর্য ও জীবনবোধ উপলব্ধি করার জন্য।
- যারা কুরআন বোঝার পাশাপাশি তার বিধানকে জীবনে প্রয়োগ করতে চান।
- ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদরাসার পাঠ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
লেখক মনে করেন — এটি কেবল তাত্ত্বিক নয়—বাস্তব জীবনের আলোচনাতেও প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োগযোগ্য।
ব্যবহারিক সুপারিশ ও উপযোগিতা
“মাআরিফুল কুরআন” সকল গবেষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সাধারণ পাঠকের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এটি শিক্ষক ও ছাত্ররা যৌথভাবে পাঠচক্র তৈরি করতে ব্যবহার করতে পারেন।
পাঠ্য পদ্ধতি: “প্রতিটি খণ্ড শেষে থাকা সারাংশ অধ্যয়ন করলে কুরআনের মূল বার্তা ও জীবনের দিকনির্দেশনা সহজে বোঝা যায়।”
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
এই বইটি ইসলামি শিক্ষার প্রচার-প্রসারে এক মূল্যবান সম্পদ। বিশেষত দাওয়াতি বক্তা, শিক্ষক ও তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য এই গ্রন্থটি কুরআন অধ্যয়নের এক অনন্য সহচর।
মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ.) রচিত “মাআরিফুল কুরআন” pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে খণ্ডগুলোর নামের উপর ক্লিক করুন।




