মহাত্মা গান্ধী: Mahatma Gandhi Books

Mahatma Gandhi Books

মহাত্মা গান্ধী (মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী) কর্তৃক রচিত pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন
১। আত্মকথা অথবা সত্যের প্রয়োগ
২। গঠনমূলক কর্মপদ্ধতি
৩। গীতা বোধ
৪। দুর্ণীতির পথে
৫। হিন্দ স্বরাজ

লেখক পরিচিতিঃ

জন্মঃ জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ২রা অক্টোবর ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তত্কালীন ব্রিটিশ ভারতবর্ষের অন্তর্গত কাথীয়াবাড় প্রদেশের পোরবন্দরের এক জনৈক বেনিয়া হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা করমচাঁদ উত্তরচাঁদ গান্ধী এক প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রনেতা ছিলেন এবং তাঁর মাতা পূত্তলিবাই ছিলেন হিন্দু শাস্ত্র মতে একজন নিষ্ঠাবান মহিলা। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী গান্ধীজির বয়স মাত্র ১৩ বছর হতে না হতেই সমবয়সী কস্ত্তরি বাঈ সহিত বিবাহ সম্পন্ন করেন এবং চার সন্তানের পিতাও হন।

শিক্ষা জীবনঃ শৈশব অবস্থায় থেকেই পিতার কাছ থেকে সত্য ও সাহসের শিক্ষার পাশাপাশি মাতার কাছে পেয়েছেন কঠোর ব্রত পালনের শিক্ষা। এরপর কাথিয়াবাড়ে  বাল্য শিক্ষা সম্পন্ন করে ১৮ বছর বয়সে ম্যাট্রিক পাশ করেন। বড়ো ভাইয়ের ইচ্ছাস্বরূপ ব্যারিস্টারী পড়তে বিলাতে যেতে চাইলে পরিবার পরিজন ছেড়ে ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বিলাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে কঠোর অধ্যবসার মাধ্যমে ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে ব্যারিস্টারী পাশ করে দেশে ফেরেন।

কর্মজীবনঃ বিলেত থেকে ব্যারিস্টারি শিক্ষায় সফলতা লাভের পর আইনজীবী হিসাবে কাজ করতে থাকেন তার পরবর্তীতে আব্দুল্লা এন্ড সন্স এর আইনজীবি হিসাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেন। যা গান্ধীজির জীবনে এনে দেয় নাটকীয় পরিবর্তন। এখানে তিনি ভারতীয় ও কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি সাধারণত বৈষম্যের স্বীকার হন তার সেখানে ভারতীয়দের অধিকার সচেতন করে তুলতে ১৮৯৪ সালে নাটাল ইন্ডিয়ান কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানকার ভারতীয়দের নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে কৃষ্ণাঙ্গ-শ্বেতাঙ্গ  আন্দোলন শুরু করেন। এরপর ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ৯ই জানুয়ারী ভারতবর্ষের পুনরায় প্রত্যাগমন করার মাধ্যমে সক্রিয় ভাবে ভারতীয় রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করেন।

চম্পারন ও খেদা সত্যাগ্রহ আন্দোলনঃ ১৯১৮ সালের চম্পারণ বিক্ষোপ ও খেদা সত্যাগ্রহ আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার প্রস্যুত জমিদারদের কৃষক সমাজের প্রতি বর্বরোচিত অত্যাচার ও খাজনা আদায়ের বিরুদ্ধে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সহযোগে আন্দোলন শুরু করেন। ফলস্বরূপ খাজনা আদায় বন্ধ ও বন্দীদের মুক্তিদান করেন।

অসহযোগ আন্দোলনঃ গান্ধীজির মতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র হওয়া প্রয়োজন অসহযোগ ও শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ করা। পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগে ভারতীয়দের অপর বর্বরোচিত হত্যা কান্ডের তীব্র দিন্দা করেন ব্রিটিশ সরকার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোপ ঘোষণা করেন। স্বরাজের দাবিতে ১৯২১ সালে গান্ধীজি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নির্বাহী হন। স্বরাজের দাবিতে খাদি চরকিতে সুতা কাটার মাধ্যমে বিদেশী পণ্য বর্জন স্বদেশী পণ্য গ্রহণের আহ্বান জানান। এসময় অসহযোগ আন্দোলন জনপ্রিয়তা ও সাফল্য অর্জন করে। অপ্রত্যাশিত ভাবে উত্তরপ্রদেশের চৌরিচৌড়াতে সংঘর্ষ বাঁধলে এ আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে।

স্বরাজ ও লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনঃ বিংশ শতাব্দীর ২০ দশকে নিজেকে নিরব রাখার মাধ্যমে স্বরাজ পার্টি ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে বাধা দুর করতে চেষ্টা করেন। ১৯২৮ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ভারতকে ডোমিনিয়মের মর্যাদা দেবার দাবি জানানোর মাধ্যমে পূর্ণ স্বাধীনতার লক্ষে হুমকি দেন। ১৯২৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর জাতীয় পতাকা উন্মোচন ও ১৯৩০ সালে ২৬শে জানুয়ারী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এই দিনটিকে প্রথম স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালন করে।

এসময় প্রত্যাহিক অত্যাব্শকিয় পণ্য লবণের উপর কর আরোপের বিরুদ্ধে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন কুচকাওয়াজ করেন আত্মনির্ভর ভাবে নিজ হাতে লবণ তৈরির উদ্দেশ্যে এলাহাবাদ থেকে ডান্ডি পযর্ন্ত ৪০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যায়।

এই আন্দোলন সফল হলে ব্রিটিশ সরকার ৬০০০০ জন ভারতীয়কে গ্রেফতার করে। ১৯৪১ সালে গান্ধী – ডারউইন অ্যাক্ট এর মাধ্যমে অসহযোগ আন্দোলনের বন্ধের বিনিময়ে বন্দীদের মুক্তি আদায় করেন ও স্বাধীনতার পথ সুপ্রস্থ করেন।

গান্ধীজির শিক্ষানীতিঃ গান্ধীজির লক্ষ্যই ছিল সত্যের পথে শিক্ষাকে অবৈতনিক সর্ব সাধারণের জন্য প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি ছিলেন শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার পক্ষপাতি। ভারতবর্ষের বুনিয়াদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠাই ছিল তার অমর কৃতি।

সম্মাননাঃ স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা আধ্যাতিক চেতনার অধিকারী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর খ্যাতি শুধু ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না বরং সমগ্র বিশ্ব জুড়ে মহাত্মা গান্ধী নামে পরিচিত ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন সমগ্র ভারতবাসীর জাতির জনক তাই ভারত সরকারের তরফে ২রা অক্টোবর তার জন্মদিনে গান্ধী জয়ন্তী উদযাপন করে থাকেন। ২০০৭ সালে ১৫ই জুন জাতি সংঘের সাধারণ অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনটিকে আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস দিবস হিসাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও ভারতীয় সংসদ ভবনে গান্ধীজির প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।

জীবনাবসানঃ স্বাধীনতার প্রতি কঠোর সংগ্রাম করা গান্ধীজি মহাশয় পাননি স্বাধীনতার চরমস্বাদ। বরং ১৯৪৮ সালে ৩০শে জানুয়ারী দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক প্রার্থনা সভায় এক আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।

আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ

error: Content is protected !!
Scroll to Top