ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা বিষয়ক বই: Islamic polity Books

ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা বিষয়ক বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন।
১। আদর্শ রাষ্ট্র ও বিশ্ব ব্যবস্থায় ইসলাম – মজিবুর রহমান বাগদাদী
২। আধুনিক বিশ্বের প্রয়োজন ইসলামী রাষ্ট্র – ড. খুরশীদ আহমদ
৩। আধুনিক রাষ্ট্র – রবার্ট মরিসন ম্যাকাইভার
৪। আমাদের শাসক যদি এমন হত – হযরত আলী রাঃ
৫। আল কুরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিতে ভোট – ড. মোহাম্মাদ শফিউল আলম ভুঁইয়া
৬। আল কুরআনে রাষ্ট্র ও সরকার – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৭। আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন – অধ্যাপক গোলাম আযম
৮। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন এবং এর পরিপন্থী বিষয় বর্জনের অপরিহার্যতা – আব্দুল আযীয বিন আব্দুল বাজ
৯। আল্লাহর খিলাফত প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি – অধ্যাপক গোলাম আযম
১০। ইসলাম ও আধুনিক রাজোনীতি – মুফতী তাকি উসমানী
১১। ইসলাম ও খিলাফত – ড. মফীজুল্লাহ কবীর
১২। ইসলাম ও গণতন্ত্র দুটি জীবনাদর্শের সংঘাত – মুহাম্মদ আজিজুর রহমান খান
১৩। ইসলাম ও গনতন্ত্র – অধ্যাপক গোলাম আযম
১৫। ইসলাম ও চরমপন্থা – ইউসুফ আল কারযাভী
১৬। ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ – মরিয়ম জামিলা
১৭। ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
১৮। ইসলাম ও ধর্মহীন গণতন্ত্র – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
১৯। ইসলাম ও বাস্তবতার আলোকে আরব জাতীয়তাবাদ – আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায
২০। ইসলাম বিরোধী আইন জারীর বিধান ও ফিতনাতুত তাকফীর – নাসেরুদ্দিন আল আলবানী
২১। ইসলামী আইন – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
২২। ইসলামী আইন ও বিচার ১/১২ বর্ষঃ ১/৪৭সংখ্যাঃ – আবদুল মান্নান তালিব
২৩। ইসলামী আইন ও রাষ্ট্র – আবুল কাশেম ছিফাতুল্লাহ
২৪। ইসলামী আইন না মানার বিধানঃ কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর – ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া
২৫। ইসলামী আইন বনাম মানব আইন – আব্দুল কাদের আওদা
২৬। ইসলামী আইনতত্ত্ব – গাজী শামছুর রহমান
২৭। ইসলামী আইনে কার কি লাভ ক্ষতি – খন্দকার আবুল খায়ের
২৮। ইসলামী আইনের উৎস – মুহাম্মদ রুহুল আমিন
২৯। ইসলামী আইনের মূলনীতি – ড. মুহাম্মদ হাশিম কামালী
৩০। ইসলামী ইসতেহার – গবেষণা পত্র
৩১। ইসলামী ঐক্য – ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
৩২। ইসলামী ঐক্যমঞ্চ চাই – অধ্যাপক গোলাম আযম
৩৩। ইসলামী কিন্ডারগার্টেন রূপরেখা ও বাস্তবায়ন – মুহাম্মদ আলমগির
৩৪। ইসলামী ক্ষুদ্রঋণঃ তত্ত্ব ও প্রয়োগ – ড. মাহমুদ আহমদ
৩৫। ইসলামী খিলাফত ও নেতৃত্ব নির্বাচন – মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল গালিব
৩৬। ইসলামী খিলাফত সরকারের পররাষ্ট্রনীতির মডেল – গবেষণা পত্র
৩৭। ইসলামী খিলাফত সরকারের শিল্পায়নের মডেল – গবেষণা পত্র
৩৮। ইসলামী দণ্ডবিধি – খন্দকার আবুল খায়ের
৩৯। ইসলামী দন্ডবিধি – ড. আব্দুল আযীয আমের
৪০। ইসলামী বিচার ব্যবস্থা – মোঃ আতিকুর রহমান
৪১। ইসলামী রাজনীতি – আনসার আলী
৪২। ইসলামী রাজনীতি ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বিরোধিতা অন্তরালে
৪৩। ইসলামী রাজনীতির ভূমিকা – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৪৪। ইসলামী রাষ্ট্র ও নেতৃত্ব – নূর হোসেন মজিদী
৪৫। ইসলামে রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার মূলনীতি – মুহাম্মদ আসাদ
৪৬। ইসলামী রাষ্ট্র ও সংবিধান – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৪৭। ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমে সংগ্রামী একজন পীর – কছিমিয়া ট্রাস্ট
৪৮। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৪৯। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৫০। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা – ড. আবদুল করিম জায়দান
৫১। ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থাঃ তত্ত্ব ও প্রয়োগ – ইউসুফ আল কারযাভী
৫২। ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার পতন ও পুনরুত্থান – নোয়াহ ফেল্ডম্যান
৫৩। ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদা – ড. আহমদ আলি
৫৪। ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের অধিকার – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৫৫। ইসলামী শরিয়া মূলনীতি বিভ্রান্তি ও সঠিক পথ – আবদুস শহীদ নাসিম
৫৬। ইসলামী শরিয়াহঃ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য – ড. ইউসুফ হামিদ আল আলিম
৫৭। ইসলামী শরীয়াতে শাস্তির বিধান – ড. আব্দুল কারীম যাইদান
৫৮। ইসলামী শরীয়াতের উৎস – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৫৯। ইসলামী শরীয়াহর বাস্তবায়ন ও উম্মাহর উপর এর প্রভাব – আব্দুল্লাহ ইবন সউদ আল হুয়াইমিল
৬০। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা মৌলিক দর্শন ও শর্তাবলী – জিয়াউল হক
৬১। ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রণয়ন – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৬২। ইসলামে রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার মূলনীতি – মুহাম্মদ আসাদ
৬৩। ইসলামে সার্বভৌমত্বের সরূপ – ড. মুহাম্মদ আবদুল কাদের
৬৪। ইসলামের আইন দর্শন – আবদুল আলী
৬৫। ইসলামের আলোকে বাসস্থানের অধিকার ও নিরাপত্তা – ড. আহমদ আলী
৬৬। ইসলামের দন্ডবিধি – ড. আব্দুল হামিদ আহমদ আবু সোলাইমান
৬৭। ইসলামের দৃষ্টিতে অপরাধ – আফীফ আবদুল ফাত্তাহ্‌ তাববারা
৬৮। ইসলামের দৃষ্টিতে যুদ্ধ ও শান্তি – খলিফা আবদুল হাকিম
৬৯। ইসলামের দৃষ্টিতে রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ – আবদুলহামিদ আহমদ আবুসু
৭০। ইসলামের দৃষ্টিতে শান্তি ও যুদ্ধ – মজিদ কাদদুরী
৭১। ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ – ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
৭২। ইসলামের প্রতিরক্ষা কৌশল – জেনারেল আকবর খান
৭৩। ইসলামের রাজদণ্ড – খন্দকার আবুল খায়ের
৭৪। ইসলামের রাজনৈতিক মতবাদ – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৭৫। ইসলামের রাষ্ট্রব্যবস্থা – মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম
৭৬। ইসলামের শক্তির উৎস – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৭৭। ইসলামের শাস্তি আইন – ড.আহমদ আলি
৭৮। কমিউনিস্ট শাসনামলে ইসলাম – ড. হাসান জামান
৭৯। কুরআনে ঘোষিত মুসলিম শাসকদের ৪ দফা কর্মসূচি – অধ্যাপক গোলাম আযম
৮০। খেলাফত একমাত্র সমাধান – গবেষণাপত্র
৮১। খেলাফত ও রাজতন্ত্র – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৮২। খেলাফত ও রাজতন্ত্র গ্রন্থের ওপর অভিযোগের পর্যালোচনা – মালিক গোলাম আলি
৮৩। খেলাফতে রাশেদা – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৮৪। খোলাফায়ে রাশেদীন – মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ
৮৫। গণতন্ত্র একটি জীবন ব্যাবস্হা – আবু মুহাম্মদ আসীম আল মাকদিসী
৮৬। গণতন্ত্র প্রসঙ্গে আধুনিক চিন্তাবিদদের কিছু মন্তব্য ও তার পর্যালোচনা
৮৭। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও শুরায়ী নিজাম – মুহাম্মদ আবদুর রহীম
৮৮। জনমত গঠন ও আদর্শবাদী আন্দোলন – নূরুযযামান
৮৯। জাতি গঠনে আদর্শ মা – জাবেদ মুহম্মদ
৯০। জাতির উত্থান পতন – আব্দুল হামীদ আল মাদানী
৯১। জাতিসমূহের আগামী দিনের পথ ইসলামী বিপ্লব – মসিহ মুহাজেরী
৯২। জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রের ভিত্তি – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৯৩। জাতীয় জীবনে মূল্যবোধের অবক্ষয় – ড. মুহাম্মদ রেজাউল করীম
৯৪। দুর্নীতি পরিণাম ভয়াবহ – ড. আব্দুল্লাহ আল মারূফ
৯৫। দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গড়ার মূলনীতি – দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
৯৬। দুর্নীতি রোধে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও জবাবদিহিতাঃ ইসলামী দৃষ্টিকোণ – ড. মোঃ আকতার হোসেন
৯৭। দেশ গড়ার ডাক – অধ্যাপক গোলাম আযম
৯৮। প্রচলিত রাজনীতি নয় জিহাদই কাম্য – মুহাম্মাদ আবদুর রহীম
৯৯। প্রশাসনিক উন্নয়ন ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি – মুহাম্মদ আল-ব্যুরে
১০০। প্রাচ্যের রাজনৈতিক চিন্তা – একেএম শহীদুল্লাহ
১০১। বিচারালয় – ইমাম কুরতুবী
১০২। বিবেক-বুদ্ধি অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গত ও কল্যাণকর আইন কোনটি – মোঃ মতিয়ার রহমান
১০৩। বিশ্ব নবী প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র আদর্শ – সিরাজুল ইসলাম আলি আকবর
১০৪। বিশ্ববিজয়ী এক শক্তিধর শাসক যুল কারনাইন – ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন
১০৫। ভূমির মালিকানা বিধান – সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদী
১০৬। ভোট দেবো কেন ও কাকে – খন্দকার আবুল খায়ের
১০৭। ভোটের ইসলামী শরয়ী বিধান – মুফতী মুহাম্মদ শফী
১০৮। ভোটের ফযিলত – আবদুল গাফফার
১০৯। মরণ ব্যাধি দুর্নীতি – মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম
১১০। মাকতুবাত – ইমাম গাযযালী রহঃ
১১১। মাকাসিদ আশ শরী আহ ও ইসলামের সৌন্দর্য – মুহাম্মাদ হমাতুল্লাহ খন্দকার
১১২। মুরতাদের শাস্তি – সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
১১৩। মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন – মজীদ খাদ্দুরি
১১৪। মুসলিম ভূমির প্রতিরক্ষা – মুহাম্মদ ইসহাক খান
১১৫। মুসলিম রাষ্ট্র পরিচালন ব্যবস্থা – ডঃ মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ
১১৬। মুসলিমদের ভূমিকে রক্ষা করা – ড. আব্দুল্লাহ আযযাম
১১৭। রাজদরবারে আলিমদের গমন একটি সতর্কতা – জালালুদ্দিন সুয়ূতী
১১৮। রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের সংস্কার – মতিউর রহমান নিজামী
১১৯। রাজনীতি শিক্ষা সংস্কৃতি – বদরুদ্দীন উমর
১২০। রাজনীতির স্বার্থে ধর্ম বনাম ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি – মতিউর রহমান নিজামী
১২১। রাজনৈতিক দলের সংস্কার – অধ্যাপক গোলাম আযম
১২২। রাজনৈতিক সংকট ও জনতার দৃষ্টিপাত – এস এম হাবিবুর রহমান
১২৩। রাষ্ট্রক্ষমতার উত্থান পতনে আল্লাহ তায়ালার ভূমিকা – অধ্যাপক গোলাম আযম
১২৪। রাষ্ট্রনীতি রাজনীতি আইন ও মানবাধিকার – ড. মোঃ মাইমুল আহসান খান
১২৫। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইসলামী প্রেক্ষিত – আবদুল রশিদ মতিন
১২৬। রাসূল সাঃ এর মন্ত্রীপরিষদ – আব্দুল আজিজ শানাবি
১২৭। রাসূল সাঃ এর সরকার কাঠামো – ড. মুহাম্মদ ইয়াসীন মাজহার সিদ্দিকী
১২৮। রাসূল সাঃ লেনদেন ও বিচার ফায়সালা করতেন যেভাবে – মুহাম্মদ ইবনে ইবরাহীম আততুআইজিরী
১২৯। রাসূল্লাহর বিচারালয় – ইমাম কুরতুবী রহঃ
১৩০। রাসূলুল্লাহর বিচার ব্যবস্থা – আবদুস শহীদ নাসিম
১৩১। শরীয়ত আগে না হুকুমাত আগে – মোহাম্মদ নাছির হোসাইন
১৩২। শরীয়তি রাষ্ট্রব্যবস্থা – ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ
১৩৩। শাহ ওয়ালী উল্লাহ ও তাঁর রাজনৈতিক চিন্তাধারা – উবায়দুল্লাহ সিন্ধী
১৩৪ শ্রমিক সমস্যার স্থায়ী সমাধান – অধ্যাপক গোলাম আযম
১৩৫। সার্বভৌমত্ব ইসলামি দৃষ্টিকোণ – ড. আহমদ আলি
১৩৬। হযরত আলির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক চিঠি – এ জেড এম শামসুল আলম

ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচিতিঃ সাধারণত মনে করা হয় ইসলাম একটি ধর্ম মাত্র এবং ইসলামী শরিয়ত কেবলমাত্র নৈতিক চরিত্র ও আল্লাহর সাথে ব্যক্তির সম্পর্ক স্থাপনের নিয়ম-বিধানই পেশ করে। এ ছাড়া মানবজীবনের অন্যান্য দিক ও বিভাগ সম্পর্কে ইসলামের কিছুই বলার নেই। সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে ইসলাম একেবারেই নীরব এবং সে পর্যায়ে মুসলমানরা যেকোনো নীতি বা আদর্শ গ্রহণে সম্পূর্ণ স্বাধীন।

রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামের নির্দেশঃ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ইসলামী শরিয়তে রয়েছে মানবজীবনের সব দিক ও বিভাগ এবং সব কাজ ও ব্যাপার সম্পর্কে সুস্পষ্ট আইন ও বিধান। জীবনের এমন কোনো দিক ও বিভাগের উল্লেখ করা যেতে পারে না, যে বিষয়ে ইসলামী শরিয়তে কোনো নির্দেশ পাওয়া যায় না। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থায় রয়েছে ইবাদত, নৈতিক চরিত্র, আকিদা-বিশ্বাস এবং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক ও কাজকর্ম এবং লেনদেন পর্যায়ে সুস্পষ্ট বিধান। এর প্রত্যেকটি বিষয়ই ব্যাপক অর্থে প্রযোজ্য। মানব সমাজের ব্যক্তি ও সমষ্টি-স্বতন্ত্রভাবে এক একজন ব্যক্তি অথবা সমষ্টিগতভাবে গোটা সমাজ সম্পর্কেই আইন-বিধান রয়েছে ইসলামী শরিয়তে। এভাবে আল্লাহর এ দাবি সত্য হয়েই দেখা দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আল কিতাব-কুরআন মজিদে আমি কিছুই অবর্ণিত রাখিনি’ (সূরা আল আনআম : ৩৮)।

বস্তুত ইসলামী শরিয়তের বিধান আল্লাহর এ দাবির সত্যতা অকাট্যভাবে প্রমাণ করেছে। শরিয়তের বিধানে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়েই আইন-বিধান দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রের প্রকৃতি, তার পরামর্শভিত্তিক তথা গণতান্ত্রিক হওয়া, শাসন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলতা, ন্যায়সঙ্গত কাজে তাদের আনুগত্য, যুদ্ধ, সন্ধি, চুক্তি প্রভৃতি সর্ববিষয়ে অকাট্য বিধান রয়েছে ইসলামী শরিয়তে। আর তা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে তাই নয়, রাসূলে করিম সা:-এর সুন্নতেও রয়েছে তার ব্যাখ্যা ও বাস্তবরূপসংক্রান্ত বিধান। কুরআন-হাদিসে আমির, ইমাম ও সুলতান প্রভৃতি পারিভাষিক শব্দগুলো বারবার ব্যবহৃত হয়েছে।

এ শব্দগুলো বোঝায় সেই ব্যক্তিকে যার হাতে রয়েছে সার্বভৌমত্ব, শাসন ও আইন রচনার ক্ষমতা। আধুনিক পরিভাষায় তাই হলো সরকার বা গভর্নমেন্ট। সরকার বা গভর্নমেন্ট হলো রাষ্ট্রের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কাজেই যেসব আয়াত এবং হাদিসের যেসব উক্তিতে এ পরিভাষাগুলো ব্যবহৃত হয়েছে তাকে বাস্তবায়ন করা একান্তই জরুরি। কেননা, এগুলো শুধু পড়া বা মুখে উচ্চারণের জন্যই বলা হয়নি, বরং বলা হয়েছে এ জন্য যে, তা যেমন পড়া হবে তেমনি তাকে কার্যকর করাও হবে। আর এগুলো কার্যকর করতে হলে ইসলামী শরিয়তের বিধিবিধান অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র কায়েম করা অপরিহার্য।

শরিয়তের নির্দেশ পালন ও রাষ্ট্রব্যবস্থাঃ তা ছাড়া শরিয়তের এমন অনেক আইন-বিধান রয়েছে যা কার্যকর করতে হলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠা না করে সেগুলোর বাস্তবায়ন আদৌ সম্ভব নয়। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মানুষের পরস্পরের বিচার-ফয়সালা করার এবং আল্লাহর পথে যুদ্ধ করার নির্দেশ রয়েছে কুরআন-হাদিসে। কিন্তু রাষ্ট্র যতক্ষণ পর্যন্ত এ কাজ না করবে ততক্ষণ কোনো ব্যক্তি বা সমাজের সাধারণ মানুষের পক্ষে তা করা কিছুতেই সম্ভব হতে পারে না। এ জন্যই জনগণের উপর কোনো কিছু কার্যকর করার ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্রব্যবস্থা একান্তই জরুরি। এ পর্যায়ের যাবতীয় হুকুম-বিধানের প্রকৃতিই এমনি। এ কথাটি বোঝাবার জন্যই ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেছেন, জনগণের যাবতীয় ব্যাপার সুসম্পন্ন করা-রাষ্ট্র কায়েম করা দ্বীনের সর্বপ্রধান দায়িত্ব। বরং রাষ্ট্র ছাড়া দ্বীন প্রতিষ্ঠা হতেই পারে না। আরো কথা এই যে, আল্লাহ তায়ালা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের প্রতিরোধ এবং নিপীড়িতদের সাহায্য করা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। এভাবে তিনি জিহাদ, ইনসাফ ও আইন-শাসন প্রভৃতি যেসব কাজ ওয়াজিব করে দিয়েছেন তা রাষ্ট্রশক্তি ও রাষ্ট্র কর্তৃত্ব ছাড়া কিছুতেই সম্পন্ন হতে পারে না (আস-সিযাসাতুশ শরইয়্যাহ, পৃষ্ঠা-১৭২-১৭৩)।

অতএব, শরিয়তের আইন-বিধান জারি ও কার্যকর করার জন্য ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করা একটি অপরিহার্য জরুরি কর্তব্য। আল্লাহর ইবাদাতের জন্য ইসলামী রাষ্ট্র জরুরি : কথা এখানেই শেষ নয়। আল্লাহর ইবাদতের দায়িত্ব পালনের জন্যও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে তাঁরই ইবাদত করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন, আমি জিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি শুধু এ উদ্দেশ্যে যে, তারা আমারই ইবাদত করবে (সূরা আয যারিয়াত : ৫৬)।
কুরআনের এই ইবাদত শব্দটি ব্যাপক অর্থবোধক পরিভাষা। আল্লাহ তায়ালা যেসব কথা, কাজ-প্রকাশ্য বা গোপনীয়-ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন তা সবই এর অন্তর্ভুক্ত।

ইবাদত শব্দের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের দৃষ্টিতে মানুষের যাবতীয় কথা, কাজ ব্যবহার প্রয়োগ, আয়-ব্যয় ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক সম্বন্ধ- এক কথায় মানুষের সমগ্র জীবন ইসলামী শরিয়ত নির্ধারিত পথ ও পন্থা এবং নিয়ম ও পদ্ধতি অনুযায়ী সুসম্পন্ন হওয়া কর্তব্য হয়। তা যদি করা হয় তাহলেই আল্লাহর মানব সৃষ্টি সংক্রান্ত উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সার্থক হতে পারে। অন্যথায় মানুষের জীবনে আল্লাহর উদ্দেশ্য পূর্ণ হতে পারে না, আল্লাহর উদ্দেশ্যের দৃষ্টিতে মানবজীবন ব্যর্থ ও নিষ্ফল হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু মানুষের জীবনকে এদিক দিয়ে সার্থক করতে হলে গোটা সমাজ ও পরিবেশকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে করে এ দৃষ্টিতে জীবনযাপন করা তাদের পক্ষেই সহজ-সাধ্য হয়ে ওঠে। কেননা মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের মধ্যেই যাপিত হয় মানুষের জীবন আর মানুষ যে সমাজ পরিবেশে বসবাস করে তার দ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়াই হচ্ছে মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতি। এ প্রভাব স্বীকৃতির ফলেই মানুষ যেমন ভালো হয় তেমন মন্দও হয়। যেমন হয় হেদায়েতের পথের পথিক তেমনি হয় গোমরাহির আঁধার পথের যাত্রী। সহিহ হাদিস থেকে সমাজ-পরিবেশের এ অনস্বীকার্য প্রভাবের কথা সমর্থিত। নবী করিম সা: ইরশাদ করেছেন, প্রত্যেকটি সন্তানই প্রাকৃতিক ব্যবস্থাধীন জন্মগত প্রকৃতিতে ভূমিষ্ঠ হয়। অতঃপর তার পিতা-মাতা হয় তাদের ইহুদি বানিয়ে দেয়, নয় খ্রিষ্টান কিংবা অগ্নিপূজক। ঠিক যেমন করে পশু প্রসব করে তার পূর্ণাঙ্গ শাবক। তাতে তোমরা কোনো খুঁত দেখতে পাও কি, যতক্ষণ না তোমরা নিজেরা তাতে খুঁত সৃষ্টি করে দাও (আল মুনতাখাব মিনাস সুন্নাহ, ৩৯১ পৃষ্ঠা)?

এ হাদিস অনুযায়ী ছোট্ট শিশুর পিতা-মাতা সমন্বিত সমাজই হচ্ছে তার জন্য ছোট্ট সমাজ। এ সমাজ পরিবেশেই তার জন্ম, লালন-পালন এবং ক্রমবৃদ্ধি। অতএব, পিতা-মাতা যেরকম হবে তাদের সন্তান হবে ঠিক তেমনি। তারা যদি পথভ্রষ্ট হয়, তাহলে তারা তাদের সন্তানকেও পৌঁছে দেবে গোমরাহির অতল গহ্বরে। আল্লাহ যে সুস্থ প্রশান্ত প্রকৃতির ওপর শিশুকে পয়দা করেছেন তা থেকে তারা বহিষ্কৃত করে নেয়। পক্ষান্তরে তারা যদি সত্যদর্শী ও নেককার হয় তাহলে তারা তাদের সন্তানকে আল্লাহর সৃষ্টি প্রকৃতির ওপর বহাল রাখতে এবং একে কল্যাণের পথে পরিচালিত করতে পারে। যেমন কুরআন মজিদে বলা হয়েছে যে, বিপর্যস্ত সমাজ ইসলামের বিধিনিষেধ কার্যকর করার পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। ফলে মুসলমান সেখানে ইসলামের উদ্দেশ্যানুযায়ী জীবনযাপন করতে পারে না। তখন সেখান থেকে অন্যত্র এক অনুকূল সমাজ পরিবেশে হিজরত করে চলে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মুসলমানকে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ফেরেশতাগণ যেসব লোকের জান এ অবস্থায় কবজ করেছে যে, তারা ছিল আত্ম-অত্যাচারী, তাদের জিজ্ঞেস করবে, তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলবে, আমরা দুনিয়ায় দুর্বল ছিলাম। তখন ফেরেশতাগণ বলবেন, আল্লাহর জমিন কি বিশাল প্রশস্ত ছিল না, সেখানে তোমরা হিজরত করে যেতে পারতে? এসব লোকের পরিণাম হলো জাহান্নাম এবং তা অত্যন্ত খারাপ জায়গা (সূরা আন নিসা : ৯৭)।

কিন্তু ইসলামী সমাজ গঠন করা কিভাবে সম্ভব? তা কি শুধু ওয়াজ-নসিহত বক্তৃতা-ভাষণেই কায়েম হতে পারে? না তা সম্ভব নয়। সে জন্য প্রয়োজন পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করা। ইসলামী রাষ্ট্রের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সম্ভব ইসলামের আদর্শ সমাজ গঠন। কেননা, এরূপ একটি রাষ্ট্র কায়েম হলেই তা দ্বারা ইসলামের পক্ষে ক্ষতিকর মতামত প্রচার ও শরিয়তবিরোধী কাজ-কর্ম বন্ধ করা সম্ভব। এ কাজের জন্য যে শক্তি ও ক্ষমতার প্রয়োজন তা কেবল এ রাষ্ট্রের হাতেই থাকতে পারে, কোনো বেসরকারি ব্যক্তি বা সমাজ সাধারণের হাতে এ শক্তি ও ক্ষমতা কখনো থাকে না। কুরআনের আয়াত থেকেও তা প্রমাণিত। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, বস্তুত আমি পাঠিয়েছি আমার নবী-রাসূলগণকে এবং তাদের সাথে নাজিল করেছি কিতাব ও মানদণ্ড- যেন লোকেরা ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আরো নাজিল করেছি লৌহ। এর মধ্যে রয়েছে বিযুক্ত অনমনীয় শক্তি এবং জনগণের জন্য অশেষ কল্যাণ। আরো এ জন্য যে, কে আল্লাহ এবং তার রাসূলের অগোচরে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে তাকে যেন আল্লাহ জানতে পারেন (সূরা আল হাদিদ : ২৫)। কুরআন দ্বারা যে হেদায়াতপ্রাপ্ত হয় না আল্লাহ তাকে রাষ্ট্রশক্তি দ্বারা হেদায়াত করেন।

রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা যখন ইসলামী শরিয়তের স্বাভাবিক দাবি ও প্রবণতা, শুধু তা-ই নয় ইসলামী শরিয়ত যখন তারই জন্য নির্দেশ দেয় তখন সে কাজ রাসূলে করিম সা: এরও কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে পারে না। তাই ইতিহাস প্রমাণ করেছে, রাসূলে করিম সা: এমনি একটি রাষ্ট্র কায়েমের জন্য মক্কা শরিফে থাকাবস্থায়-ই বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। আর তার সূচনা হয়েছিল আকাবার দ্বিতীয়বারের শপথকালে এবং মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার আগেই এ প্রচেষ্টা সম্পূর্ণতা লাভ করেছিল।

আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ

error: Content is protected !!
Scroll to Top