ফারায়েজ বা ইসলামী উত্তরাধিকার আইন: Islamic inheritance law pdf

ফারায়েজ বা ইসলামী উত্তরাধিকার আইন
ফারায়েজ বা ইসলামী উত্তরাধিকার আইন বিষয়ক বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন।

১। ইসলামী উত্তরাধিকার আইনে নারীর অধিকার ও ফারায়েয — মুহাম্মদ ফজলুর রহমান আশরাফী
২। ইসলামে নারীর অধিকার সেকেলে নাকি আধুনিক — ড. জাকির নায়েক
৩। ইসলামে নারীর উত্তরাধিকার — নুরুল ইসলাম
৪। ইসলামে উত্তরাধিকার আইন কতটা গাণিতিক ব্যবহারিক আইন
৫। ইসলামের উত্তরাধিকার আইন ও সাক্ষ্য আইন — মুহাম্মদ আব্দুর রহমান
৬। ফারায়েজ শিক্ষা — আবদুল আজীজ
৭। সম্পদে নারীর উত্তরাধিকারঃ ইসলামই দিয়েছে প্রাপ্তির নিশ্চয়তা — মুহাম্মদ আফীফ ফুরকান


🌿 কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে সম্পদের সুষম বণ্টন ও নারীর অধিকার বিষয়ক প্রামাণ্য গ্রন্থাবলি ⚖️

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ! প্রিয় পাঠক ও জ্ঞানান্বেষী ভাই ও বোনেরা, আপনাদের স্বাগত জানাই ইসলামী উত্তরাধিকার আইন তথা ফারায়েজ শাস্ত্রের আলোচনায়। এটি এমন এক জ্ঞান যা আল্লাহ তায়ালা মুসলিম সমাজে ন্যায়বিচার ও সম্পদের সুষম বণ্টনের জন্য নির্ধারণ করেছেন। ফারায়েজ হলো ইসলামের এক নিখুঁত বিধান, যা সমাজের পক্ষপাত, অবিচার বা দ্বন্দ্বের কোনো সুযোগ রাখে না। এই পোস্টটি ফারায়েজ আইন, এর গাণিতিক কাঠামো, এবং বিশেষত এই আইনে নারীর অধিকার নিয়ে রচিত কিছু নির্বাচিত ও প্রামাণ্য PDF বইয়ের সংকলন। এই জ্ঞান অর্জন ও এর বাস্তবায়ন আমাদের ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য অপরিহার্য, ইনশাআল্লাহ।


১. ফারায়েজ আইনের মূলনীতি ও গাণিতিক কাঠামো

ইসলামী উত্তরাধিকার আইন এক নিখুঁত ও গাণিতিকভাবে সুনির্দিষ্ট শাস্ত্র। মৃত ব্যক্তির সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে ইসলামে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে — যেমন, প্রথমে ঋণ পরিশোধ, এরপর বৈধ অছিয়ত বাস্তবায়ন, তারপর অবশিষ্ট সম্পদের বণ্টন।

“আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন: এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান।” — (সূরা আন-নিসা: ১১)

এই আয়াতই ইসলামী উত্তরাধিকার আইনের মৌলিক ভিত্তি। ফারায়েজ এমন এক জ্ঞান, যা সঠিকভাবে না বোঝলে পারিবারিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য ‘ফারায়েজ শিক্ষা’ (আবদুল আজীজ) এবং ‘ইসলামের উত্তরাধিকার আইন ও সাক্ষ্য আইন’ (মুহাম্মদ আব্দুর রহমান) এর মতো গ্রন্থসমূহ ফারায়েজের গাণিতিক কাঠামো সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছে। এই বইগুলো পাঠকের সামনে স্পষ্ট করে যে, ইসলামী আইন কেবল ধর্মীয় নির্দেশ নয়, বরং এক বৈজ্ঞানিক ও বাস্তবধর্মী প্রক্রিয়া। ফারায়েজ শেখার মাধ্যমে মানুষ সম্পদের ন্যায্য বণ্টন ও আল্লাহর বিধান অনুসারে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এটি সমাজে সম্পদের সঠিক প্রবাহ নিশ্চিত করে।


২. উত্তরাধিকার আইনে নারীর অধিকার

ইসলামের উত্তরাধিকার আইন নারীকে সম্পত্তিতে সুনির্দিষ্ট ও ন্যায্য অংশীদার করেছে — যা মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত। ইসলাম সমালোচকরা প্রায়শই দাবি করেন যে, নারীকে কম অধিকার দেওয়া হয়েছে; অথচ সত্য হলো, ইসলামই প্রথম নারীকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও উত্তরাধিকারের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।

“পুরুষ যা অর্জন করে, তাতে তার অংশ আছে এবং নারী যা অর্জন করে, তাতেও তার অংশ আছে।” — (সূরা আন-নিসা: ৩২)

এই ন্যায়বিচারের ধারণাকে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন ‘ইসলামী উত্তরাধিকার আইনে নারীর অধিকার ও ফারায়েয’ (মুহাম্মদ ফজলুর রহমান আশরাফী) এবং ‘ইসলামে নারীর উত্তরাধিকার’ (নুরুল ইসলাম) প্রণীত গ্রন্থে। ড. জাকির নায়েক তাঁর বই ‘ইসলামে নারীর অধিকার: সেকেলে নাকি আধুনিক’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে, ইসলাম নারীকে পিতা, স্বামী বা ভাইয়ের ওপর নির্ভরশীল না করে সম্পত্তিতে পূর্ণ অধিকার দিয়েছে। অপরদিকে, পাশ্চাত্যে শতাব্দী আগে পর্যন্ত নারীকে সম্পত্তির অধিকার দেওয়া হয়নি। ‘সম্পদে নারীর উত্তরাধিকারঃ ইসলামই দিয়েছে প্রাপ্তির নিশ্চয়তা’ (মুহাম্মদ আফীফ ফুরকান) বইটি এই সত্যকে আধুনিক সমাজের আলোচনায় উপস্থাপন করেছে। ফলে দেখা যায়, ইসলামী উত্তরাধিকার আইন নারীকে শুধু অর্থনৈতিক নিরাপত্তাই দেয়নি, বরং পারিবারিক সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষার দিকেও গুরুত্ব দিয়েছে।


৩. ফারায়েজ শিক্ষার গুরুত্ব ও বাস্তবায়ন

রাসূলুল্লাহ ﷺ ফারায়েজ শিক্ষাকে ইসলামী জ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ এই জ্ঞান হারিয়ে গেলে সমাজে অবিচার ও বিভাজন ছড়িয়ে পড়বে।

“ফারায়েজ শিক্ষা করো এবং অপরকে শিক্ষা দাও। কারণ, এটি জ্ঞানের অর্ধেক, আর এটিই সর্বপ্রথম বিদায় নেবে।” — (ইবনে মাজাহ)

এই হাদীস প্রমাণ করে যে, ফারায়েজ কেবল হিসাবের জ্ঞান নয়, বরং এটি সমাজে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার এক অনন্য মাধ্যম। আমাদের সংকলিত বইগুলো যেমন ‘ইসলামে উত্তরাধিকার আইন কতটা গাণিতিক ব্যবহারিক আইন’— ফারায়েজের শিক্ষা ও প্রয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরে। এই আইন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সম্পদের ন্যায্য প্রবাহ নিশ্চিত করে, যাতে সম্পদ কেবল নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত না হয়। ফলে ইসলামী অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে এবং পারিবারিক ঐক্য বজায় থাকে। ফারায়েজ শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে আরও জানতে ‘ইলমে ফারায়েজ’ এবং ‘উত্তরাধিকার আইন ও ফারায়েজ’ বইগুলো সহায়ক।


৪. প্রায়োগিক দিক ও পারিবারিক শান্তি

সমাজে প্রায়শই দেখা যায়, উত্তরাধিকার নিয়ে বিভাজন ও কলহ সৃষ্টি হয়— যা ইসলামী নির্দেশনা না মানার ফল। ইসলামের ফারায়েজ আইন মেনে চললে এই সমস্যাগুলো দূর হয় এবং পরিবারের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। উত্তরাধিকার আইন শেখা মানে কেবল সংখ্যা বা হিসাব শেখা নয়; এটি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী ন্যায়বিচারের চর্চা করা। এই জ্ঞান অর্জন করা এবং তা অন্যদের শেখানো — উভয়ই ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।

ফারায়েজ আইন কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক একটি পরিপূর্ণ বিধান। এটি শেখা এবং প্রয়োগ করা উভয়ই সওয়াবের কাজ। এই জ্ঞান আমাদের পরিবারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করে।

এই জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে মুসলিমরা সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং ব্যক্তিগত জীবনে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। উপসংহার: ফারায়েজ আইন ইসলামের ন্যায়বিচারের প্রতীক। আল্লাহ তায়ালা এই আইনের মাধ্যমে সমাজে সম্পদের সুষম বণ্টন ও পারিবারিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমাদের উচিত এই জ্ঞান অর্জন করা এবং জীবনের বাস্তব ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে তাঁর বিধান মেনে চলার তৌফিক দিন। আমিন।

সংগ্রহ: বইগুলি আপনার ভালো লাগলে দয়াকরে নিকটবর্তী লাইব্রেরী থেকে ক্রয় করুন।
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ 💚

error: Content is protected !!
Scroll to Top