📜 তাফসীরে জালালাইন — দুই জালাল: আল-মহল্লী ও আস-সুয়ুতীর রচিত কুরআনের সংক্ষিপ্ত ও নির্ভরযোগ্য তাফসীর
রচয়িতা: ইমাম জালালুদ্দীন আল-মহল্লী ও ইমাম জালালুদ্দীন আস-সুয়ুতী (রহঃ)

“তাফসীরে জালালাইন” (আরবি: تفسير الجلالين) — ইসলামি জ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম সংক্ষিপ্ত, অথচ গভীর অর্থবহ তাফসীরগ্রন্থ। এটি দুইজন মহামান্য মুফাসসিরের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রচিত— ইমাম জালালুদ্দীন আল-মহল্লী (রহঃ) ও তাঁর ছাত্র ইমাম জালালুদ্দীন আস-সুয়ুতী (রহঃ)। তাদের দু’জনের নামের প্রথম অংশ “জালাল” হওয়ায়, এই তাফসীরের নামকরণ হয়েছে “জালালাইন” অর্থাৎ “দুই জালাল”। এই গ্রন্থটি এমনভাবে রচিত হয়েছে যাতে কুরআনের প্রতিটি আয়াতের ব্যাখ্যা সংক্ষিপ্ত হলেও সম্পূর্ণ অর্থবহভাবে উপস্থাপিত হয়। এটি শিক্ষার্থী, আলেম, মুফাসসির ও সাধারণ পাঠক — সকলের জন্য উপযোগী একটি তাফসীর।
রচনার ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট
ইমাম জালালুদ্দীন আল-মহল্লী (রহঃ) (মৃত্যু: ৮৬৪ হিজরি) এই তাফসীরের সূচনা করেন, সূরা কাহফ থেকে সূরা নাস পর্যন্ত ব্যাখ্যা করে। পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর ছাত্র ইমাম জালালুদ্দীন আস-সুয়ুতী (রহঃ) (মৃত্যু: ৯১১ হিজরি) সূরা আল-ফাতিহা থেকে সূরা ইসরাআ পর্যন্ত অংশ সম্পন্ন করেন এবং পুরো গ্রন্থটি সংকলিত করে “তাফসীরে জালালাইন” নামে পরিচিত করেন। এই তাফসীর মিশরের “আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়” সহ বিশ্বজুড়ে ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে স্বীকৃত। এটি হাদীস, আরবি ব্যাকরণ ও কুরআনের ভাষাগত দিকগুলোকে ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে অতুলনীয় অবদান রেখেছে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব: “এই তাফসীরটি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিশ্বজুড়ে ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে স্বীকৃত।”
গ্রন্থের বিষয়বস্তু ও বিন্যাস
এই তাফসীরটি সংক্ষিপ্ত হলেও এতে প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ইঙ্গিত রয়েছে। প্রতিটি আয়াতের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যা এমনভাবে দেওয়া হয়েছে যাতে পাঠক মূল অর্থ সহজেই বুঝতে পারে।
এই তাফসীরের মূল বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে:
- আয়াতের মূল অর্থ, প্রাসঙ্গিক অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা।
- ব্যাকরণ ও শব্দার্থের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ।
- হাদীস ও সহীহ রেওয়ায়েত দ্বারা তাফসীরের সমর্থন।
- ধর্মীয়, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা।
তাফসীরের অনন্য বৈশিষ্ট্য
লেখক বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন যে, এটি জটিল আরবি ব্যাকরণ বা ফিকহী আলোচনায় না গিয়ে সংক্ষেপে মূল বক্তব্য তুলে ধরে। ফলস্বরূপ, পাঠক কুরআনের অর্থ সহজভাবে আয়ত্ত করতে পারেন।
তাফসীরের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
- সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর ব্যাখ্যা — কুরআনের মর্মার্থ অনুধাবনের জন্য সহজপাঠ্য।
- শব্দভিত্তিক বিশ্লেষণ ও আরবি ব্যাকরণের শুদ্ধতা।
- তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন (কুরআনের ব্যাখ্যা কুরআনের মাধ্যমেই)।
- শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক ও মধ্যম স্তরের শ্রেষ্ঠ তাফসীরগ্রন্থ।
মূলনীতি: “এটি জটিল আরবি ব্যাকরণ বা ফিকহী আলোচনায় না গিয়ে সংক্ষেপে মূল বক্তব্য তুলে ধরে।”
কেন পড়বেন এই গ্রন্থটি?
তাফসীরে জালালাইন এমন একটি গ্রন্থ, যা নবীন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ আলেম পর্যন্ত সকলের জন্য প্রাসঙ্গিক।
- যারা সংক্ষিপ্ত অথচ অর্থবহ তাফসীর খুঁজছেন।
- যারা প্রতিটি শব্দের ব্যাখ্যা এত নিখুঁতভাবে উপস্থাপিত দেখতে চান।
- যারা অল্প সময়ে কুরআনের মূল মর্মার্থ বুঝতে চান।
লেখক মনে করেন — এই গ্রন্থটি বিশ্বের বহু দাওয়াহ কেন্দ্র, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
অন্যান্য ব্যাখ্যা গ্রন্থ ও উপযোগিতা
“তাফসীরে জালালাইন”-এর উপর শতাধিক ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচিত হয়েছে, যার মধ্যে **আল-ফুতুহাতুল ইলাহিয়্যাহ** সর্বাধিক স্বীকৃত। এই তাফসীরটি পাঠের সময় সংক্ষিপ্ত নোট গ্রহণ করলে ও অন্যান্য তাফসীরের সঙ্গে তুলনা করলে জ্ঞান আরও সুগভীর হয়। এটি সাধারণ পাঠকের জন্য এমন এক তাফসীর যা অল্প সময়ে কুরআনের মর্মার্থ বুঝতে সহায়ক।
ব্যবহারিক সুপারিশ: “যারা আরবি ভাষা শিখছেন বা তাফসীর অধ্যয়নের প্রাথমিক ধাপে আছেন, তাঁদের জন্য এটি শ্রেষ্ঠ সহায়ক।”
পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
ইসলামিয়া কুতুবখানা কর্তৃক প্রকাশিত “তাফসীরে জালালাইন” বর্তমানে বাংলা ও ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হওয়ায় এটি সাধারণ পাঠকদের জন্যও সমানভাবে উপযোগী হয়েছে।
ইমাম জালালুদ্দীনদ্বয়ের রচিত “তাফসীরে জালালাইন” pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে খণ্ডগুলোর নামের উপর ক্লিক করুন।
ইসলামিয়া কুতুবখানা কর্তৃক প্রকাশিতও



