📜 তাফসীরে উসমানী — শায়খুল হিন্দ ও শাব্বির আহমদ উসমানী কর্তৃক রচিত কুরআনের সংক্ষিপ্ত ও গভীর ব্যাখ্যা
রচয়িতা: মাহমুদুল হাসান দেওবন্দি ও শাব্বির আহমদ উসমানী (রহ.)

“তাফসীরে উসমানী” (উর্দু: تفسیر عثمانی) ইসলামী জ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর ব্যাখ্যামূলক তাফসীর গ্রন্থ। এটি দুই প্রখ্যাত আলেম — মাহমুদুল হাসান দেওবন্দি (রহ.) ও তাঁর ছাত্র শাব্বির আহমদ উসমানী (রহ.) কর্তৃক রচিত উর্দু ভাষার এক অনন্য ব্যাখ্যা। প্রথম মনজিলের অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর অংশ রচনা করেন শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান (রহ.), আর বাকি ছয় মনজিল সম্পন্ন করেন তাঁর মেধাবী শিষ্য শায়খুল ইসলাম শাব্বির আহমদ উসমানী (রহ.)। এই যৌথ কর্মটি ইসলামী জগতে “তাফসীরে উসমানী” নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে এবং আজও এটি একটি নির্ভরযোগ্য, সহজবোধ্য ও গ্রহণযোগ্য তাফসীর হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। গ্রন্থটির মূল লক্ষ্য ছিল— কুরআনের সংক্ষিপ্ত অথচ ব্যাখ্যামূলক অনুবাদ, যেখানে আয়াতের উদ্দেশ্য, প্রেক্ষাপট ও হিকমতকে সহজভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ইতিহাস ও রচনার প্রেক্ষাপট
শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান (রহ.) দেওবন্দ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম এবং তাফসীর ও হাদীসের বিশারদ আলেম ছিলেন। তিনি কুরআনের অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা উর্দু ভাষায় রচনার উদ্যোগ নেন, যাতে সাধারণ শিক্ষিত মুসলমানরাও সহজে কুরআনের মর্ম অনুধাবন করতে পারেন। কুরআনের সাতটি মনজিলের মধ্যে প্রথম মনজিল তিনি নিজে রচনা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর এই মহান কাজের দায়িত্ব নেন তাঁর ছাত্র শাব্বির আহমদ উসমানী (রহ.), যিনি বাকি অংশ সম্পন্ন করে একটি পূর্ণাঙ্গ তাফসীরের রূপ দেন। মূলত এভাবেই গঠিত হয় “তাফসীরে উসমানী”— যা একদিকে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা, অন্যদিকে ব্যাকরণ, হিকমত ও তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার সমন্বয়ে একটি গভীর তাফসীর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব: “এটি এক যৌথ কর্ম, যা সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা, ব্যাকরণ ও তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার সমন্বয়ে গঠিত।”
গ্রন্থের বিষয়বস্তু ও বিন্যাস
তাফসীরে উসমানী বাংলা অনুবাদে সাধারণত তিনটি খণ্ডে বিভক্ত, যা সমগ্র কুরআনের ব্যাখ্যা ধারণ করে।
প্রতিটি আয়াতের পাশে সংক্ষিপ্ত অর্থ, প্রেক্ষাপট, ভাষাগত ইঙ্গিত এবং তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছে।
এই তাফসীরটি রিওয়ায়েত ও দিরায়েত উভয় ধারার সমন্বয়— অর্থাৎ হাদীস, সাহাবী-তাবেয়ীদের মতামত ও যুক্তিনির্ভর বিশ্লেষণ একত্রে সংযোজিত হয়েছে।
এর খণ্ড বিভাজন সাধারণত নিম্নরূপ:
- ১ম খণ্ড: কুরআনের ১ম পারা থেকে ১০ম পারা পর্যন্ত ব্যাখ্যা।
- ২য় খণ্ড: ১১তম পারা থেকে ২০তম পারা পর্যন্ত ব্যাখ্যা।
- ৩য় খণ্ড: ২১তম পারা থেকে ৩০তম পারা পর্যন্ত ব্যাখ্যা।
তাফসীর পদ্ধতির অনন্য বৈশিষ্ট্য
লেখক বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন যে, এটি সংক্ষিপ্ত অথচ মর্মস্পর্শী ব্যাখ্যার কারণে শিক্ষার্থী ও সাধারণ পাঠকের জন্য সহজপাঠ্য ও বোধগম্য একটি গ্রন্থে পরিণত হয়েছে। এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে:
- আসবাবুন নুযূল বা নাজিলের প্রেক্ষাপট।
- আরবি শব্দের ব্যাকরণগত অর্থ ও গভীরতা।
- বিশ্বাস, আচরণ ও নৈতিকতার বাস্তব শিক্ষা।
- সংক্ষিপ্ত হিকমত বা উপসংহার— যা পাঠককে চিন্তাশীল করে তোলে।
বৈশিষ্ট্য: “সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর ব্যাখ্যা — সময়োপযোগী ও গবেষণাধর্মী।”
কেন পড়বেন এই গ্রন্থটি?
তাফসীরে উসমানী তাদের জন্য বিশেষভাবে মূল্যবান:
- যারা কুরআনের মৌলিক অর্থ ও ব্যাখ্যা জানতে চান সংক্ষিপ্ত আকারে।
- যারা ভাষাগত দিক, ব্যাকরণ ও প্রেক্ষাপট জানতে আগ্রহী।
- যারা দাওয়াতি কাজ বা শিক্ষণমূলক ক্লাসে সহজ উপস্থাপনা চান।
লেখক মনে করেন — এই গ্রন্থটি তার সংক্ষিপ্ততা, প্রাঞ্জলতা এবং নির্ভুল ব্যাখ্যার কারণে ইসলামী পাঠ্যক্রমে একটি ক্লাসিক রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ব্যবহারিক সুপারিশ ও উপযোগিতা
“তাফসীরে উসমানী” মাদরাসা, মসজিদ, বিশ্ববিদ্যালয় ও অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্মে কুরআন অধ্যয়নের জন্য আদর্শ উপকরণ। বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এটি অনুবাদ ও প্রকাশ করেছে।
তাফসীর অধ্যয়নের সময় পাঠক যেন অনুবাদ ও ব্যাখ্যাকে পাশাপাশি পড়েন। প্রতিটি আয়াতের সঙ্গে থাকা সংক্ষিপ্ত টীকা গভীরভাবে চিন্তা করলে আয়াতের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়।
উপযোগিতা: “এই তাফসীরটি পাঠককে কুরআনিক অধ্যয়নের আরও গভীরে যেতে সাহায্য করবে।”
পাঠকগোষ্ঠী ও পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
এই বইটি ইসলাম ও কুরআনের গভীরতা নিয়ে যারা আগ্রহী, সকল গবেষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সাধারণ পাঠকের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
মাহমুদুল হাসান ও শাব্বির আহমদ উসমানী রচিত “তাফসীরে উসমানী” pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে খণ্ডগুলোর নামের উপর ক্লিক করুন।




