সৌভাগ্যের পরশমণি লেখকঃ ইমাম গাজ্জালী রহঃ

গ্রন্থ পরিচিতঃ মানুষ স্বয়ংসম্পূর্ণ হইয়া জন্মগ্রহণ করে নাই এবং হেয় পদার্থে তাহার জন্ম। তাই এই পূর্ণতা হইতে তাহাকে পূর্ণতার দিকে লইয়া যাওয়া কঠোর সাধনা ও আন্তরিক পীড়াসমূহের যথোপযুক্ত চিকিৎসা ব্যতিত কিছুতেই সম্ভব নহে। যে কীমিয়া (রাসায়নিক প্রক্রিয়া) দ্বারা পিতল ও তামার সংশোধন করত বহুমূল্য স্বর্ণে পরিণত করা যায় তাহা যেমন দুঃসাধ্য এবং সকলে ইহা জ্ঞাত নহে- তেমনই এই কীমিয়া (পরশমণি) যাহা মানুষের হৃদয় হইতে পশুপক্ষীর স্বভাব দূর করত ফেরেশতাগণের মর্যাদার উন্নীত করে এবং যদ্দদ্বারা মানুষ চিরস্থায়ী সৌভাগ্য লাভে সমর্থ হয় তাহাও নিতান্ত কঠিন ও সকলেই জানে না। ইহা মানুষকে শিখাইবার উদ্দেশ্যেই এই গ্রন্থ রচনা করা হইয়াছে। বাস্তবপক্ষে ইহাই চিরস্থায়ী কীমিয়ায়ে সাআদাত অর্থাৎ সৌভাগ্যের পরশমণি। এই জন্যেই এই গ্রন্থের নাম ‘কীমিয়ায়ে সাআদাত’ অর্থাৎ ‘সৌভাগ্যের পরশমণি’ রাখা হইল এবং ইহার জন্য এই নামই অত্যন্ত উপযোগী হইয়াছে। তামা ও স্বর্ণের মধ্যে বর্ণ ও মূল্য ব্যতীত আর কোন প্রভেদ নাই। সাধারণ পরশমণি দ্বারা দুনিয়াতে ধনবান হওয়া ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্য সফল হয় না এবং দুনিয়া নিতান্ত ক্ষণস্থায়ী। এমতাবস্থায় দুনিয়ার ধনদৌলতের মূল্যই বা কতটুকু? পশু ও ফেরেশতার স্বভাবে আকাশ-পাতাল প্রভেদ। এই পরশমণি পশুকে ফেরেশতা বানাইতে পারে। সুতরাং ইহার ফল চিরস্থায়ী সৌভাগ্য এবং ইহার পুরস্কার অপরিসীম; আর কোন প্রকার মলিনতাই উহাতে প্রবেশ লাভ করিতে পারে না। অতএব ইহা ব্যতীত অন্য কোন বন্ধুকেই ‘সৌভাগ্যের পরশমণি’ বলা যাইতে পারে না।

পরশমণি যেমন কোন বৃদ্ধার পর্ণকুটীরে পাওয়া যায় না, কেবল বাদশাহের ধনভাণ্ডারে পাওয়া যাইতে পারে, তদ্রূপ চিরস্থায়ী সৌভাগ্যের পরশমণি সকল স্থান পাওয়া যায় না, একমাত্র আল্লাহর ধনভাণ্ডারেই পাওয়া যায়। আকাশে ফেরেশতাগণের আত্মা এবং জগতে পয়গম্বরগণের হৃদয় আল্লাহ্র ধন-ভাণ্ডার। সুতরাং যে ব্যক্তি পয়গম্বরের দরবার ব্যতীত অন্যত্র সৌভাগ্যের পরশমণির অনুসন্ধান করিবে সে পথভ্রান্ত ও প্রতারিত হইবে এবং তাহার সকল চেষ্টা বিফলে যাইবে। কিয়ামত দিবসে তাহার নিঃস্বতা ও অসারতা প্রকাশ পাইবে এবং দুনিয়াতে যে সে ভালকে মন্দ ধারণা করিয়া রাখিয়াছিল তজ্জন্য অপমানিত হইবে সে তখন আল্লাহর এই ঘোষণা শুনিতে ইহবে।
فَكَشَفْنَا عَنْكَ غِطَاءَكَ فَبصرك اليوم حديد .
অর্থাৎ “তখন আমা হইতে তোমার চক্ষের আবরণ খুলিয়া দিলাম ; অদ্য তোমার দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ হইল।” -(সূরা কাফ, রুকু ২, পারা ২৬

আল্লাহ্র বড় বড় নিয়ামতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত এই যে, উল্লেখিত পরশমণি মানুষকে শিক্ষা দিবার জন্য তিনি কয়েক হাজার পয়গম্বর প্রেরণ করিয়াছেন। কি প্রণালীতে মানবাত্মাকে সংশোধন করিয়া লইতে হয়, যে সমস্ত কুপ্রবৃত্তির কুস্বভাব ও কলুষিত করিয়া ফেলে উহা কি প্রকারে বিদূরিত করিতে হয় এবং কি করিয়া ও সৎ-স্বভাবে দ্বারা আত্মাকে অলঙ্কৃত করা যায়, এই সকল উপায় তাঁহারা মানুষকে শিক্ষা দিয়াছেন। আল্লাহ যেমন স্বীয় পবিত্রতা ও বাদশাহীর প্রশংসা করিয়াছেন তদপ পয়গম্বরগণের প্রেরণ সম্পর্কেও তিনি নিজের গুণকীর্তন করিয়াছেন এবং এইরূপে মানব জাতির অসাধারণ মঙ্গল সাধন করিয়াছেন।

ইমাম গাজ্জালী রহঃ কর্তৃক রচিত সৌভাগ্যের পরশমণির pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন।

সৌভাগ্যের পরশমণি ১ম খণ্ড
সৌভাগ্যের পরশমণি ২য় খণ্ড
সৌভাগ্যের পরশমণি ৩য় খণ্ড
সৌভাগ্যের পরশমণি ৪র্থ খণ্ড

আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ

error: Content is protected !!
Scroll to Top