
মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী কর্তৃক রচিত ইসলামিক pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন।
১। আল কুরআনের পরিচয়
২। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়
৩। ইনফাক ফি সাবিলিল্লাহ
৪। ইসলাম ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ
৫। ইসলাম ও সন্ত্রাসবাদ
৬। ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন
৭। ইসলামী আন্দোলন সমস্যা ও সম্ভাবনা
৮। এক পরাশক্তির অন্যায় যুদ্ধ আতঙ্কিত করেছে বিশ্বের মানুষকে
৯। কারাগারের স্মৃতি
১০। কুরআনের আলোকে মুমিনের জীবন
১১। দ্বীন প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব
১২। নারী সমাজে দাওয়াত ও সংগঠন সম্প্রসারণের উপায়
১৩। মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর জাতীয় সংসদে বক্তৃতামালা
১৪। মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব ও কর্তব্য
১৫। রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের সংস্কার
১৬। রাজনীতির স্বার্থে ধর্ম বনাম ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি
১৭। রাসূলুল্লাহর সাঃ মক্কার জীবন
✍️ প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ | আলেমে দ্বীন | রাজনৈতিক নেতা | লেখক
মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী (৩১ মার্চ ১৯৪৩ – ১১ মে ২০১৬) বাংলাদেশে ইসলামি রাজনৈতিক আন্দোলন, শিক্ষা ও সামাজিক নেতৃত্বের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ নাম। তিনি ছিলেন একইসঙ্গে একজন আলেমে দ্বীন, প্রভাবশালী চিন্তাবিদ, জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা এবং বহুগ্রন্থকার লেখক। ছাত্রজীবন থেকেই নেতৃত্ব, সংগঠন দক্ষতা ও সাহসিকতা তাকে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত করে তোলে। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃত্ব গ্রহণ করে দীর্ঘ সময় দেশের রাজনীতি, সামাজিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুসলিম উম্মাহর পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
“একজন নেতার প্রকৃত সাফল্য হলো আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে জাতিকে পথ দেখানো।” – মতিউর রহমান নিজামী
প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষাজীবন
১৯৪৩ সালের ৩১ মার্চ পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মনমথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা লুৎফর রহমান খান ছিলেন ধর্মপ্রাণ ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। গ্রামের সাধারণ পরিবেশেই তার শৈশব কাটে, কিন্তু অল্প বয়স থেকেই জ্ঞানচর্চার প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। বোয়াইলমারী মাদরাসা ও পাবনার শিবপুর ত্বহা সিনিয়র মাদরাসায় তিনি কৃতিত্বের সাথে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা থেকে ফেকাহশাস্ত্রে কামিল পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে স্থান লাভ করেন এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন।
ছাত্রজীবনে নেতৃত্ব
ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই সংগঠন, নেতৃত্বগুণ ও বক্তৃতা প্রদানের দক্ষতার কারণে তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘে দ্রুত পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৬২–৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে সংগঠনকে নতুন গতিতে এগিয়ে নেন। ১৯৬৬ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং টানা তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি অবিভক্ত পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সভাপতি হয়ে তৎকালীন উপমহাদেশে ইসলামি ছাত্র আন্দোলনকে শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করেন।
পারিবারিক জীবন
১৯৭৪ সালে শামসুন্নাহারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তার স্ত্রী ছিলেন শিক্ষিত, সামাজিকভাবে সক্রিয় এবং জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের নেতৃত্বে যুক্ত। তাদের চার পুত্র ও দুই কন্যা রয়েছে। পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করে তিনি একটি আদর্শ পরিবার গড়েন, যা তার নীতি ও মূল্যবোধের প্রতিফলন।
রাজনৈতিক জীবন ও নেতৃত্ব
মাওলানা নিজামী ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন এবং ধীরে ধীরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে উঠে আসেন। তিনি ঢাকা মহানগরের আমীর, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সেক্রেটারি জেনারেলসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি আমীর নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি ছিলেন দৃঢ়, নীতিনিষ্ঠ ও যুক্তিনির্ভর নেতা।
জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিত্ব
১৯৯১ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে তিনি সংসদে যে বিল উত্থাপন করেন তা পরবর্তীতে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়, যা বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০০১ সালের নির্বাচন শেষে চারদলীয় জোট সরকার গঠিত হলে তিনি কৃষি ও শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার উদ্যোগে শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, সাভারে চামড়া শিল্প নগরী প্রতিষ্ঠা, কৃষি খাতে আধুনিকায়ন এবং “একটি বাড়ি একটি খামার” প্রকল্পসহ বহু কার্যকর উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়।
“আদর্শ ও জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়া ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম লক্ষ্য।” – সমালোচক মতামত
আন্তর্জাতিক ভূমিকা
আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তিনি মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। বাবরী মসজিদ ধ্বংস, বসনিয়ার গণহত্যা, ফিলিস্তিন সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ফোরামে বক্তব্য দিয়ে তিনি বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেন। ইংল্যান্ডের চেথম হাউজসহ আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে বাংলাদেশ ও ইসলামী আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০০৯ সালে রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার তাকে বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্বদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
লেখালেখি ও চিন্তাধারা
তিনি ছিলেন prolifically লেখক—৬০টিরও বেশি বই রচনা করেছেন, যার মধ্যে ইসলামী চিন্তা, সামাজিক সংস্কার, নৈতিকতা, নেতৃত্ব, আন্দোলন ও গবেষণামূলক বিষয় ছিল প্রধান। তার লেখাগুলো ছিল সহজবোধ্য, যুক্তিনির্ভর এবং গভীর বিশ্লেষণমূলক। তরুণ প্রজন্মের কাছে তার চিন্তাধারা আজও অনুপ্রেরণাদায়ী।
উত্তরাধিকার ও প্রভাব
তিনি শুধু রাজনৈতিক নেতা নন—তিনি ছিলেন নৈতিক শিক্ষার প্রচারক, সমাজ সংস্কারক এবং ইসলামী আন্দোলনের রুহানি নেতা। মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন, কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান এবং ইসলামের শান্তিপূর্ণ আদর্শ প্রচারের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।
মৃত্যু
২০১৬ সালের ১১ মে গভীর রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক আলোচিত ও বিতর্কিত অধ্যায় হিসেবে স্থান পেয়েছে। তবে তার আদর্শ, লেখনী ও সংগ্রাম আজও অনেককে পথ দেখায়।
আরও পড়ুন
👉 শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী
👉 শফীউদ্দীন সরদার
সংগ্রহ: বইগুলি আপনার ভালো লাগলে দয়াকরে নিকটবর্তী লাইব্রেরী থেকে ক্রয় করুন।
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ 💚





