
প্রফেসর ডা. মোঃ মতিয়ার রহমান: জীবন, কর্ম ও অবদান
✍️ দেশসেরা সার্জন | সমাজসেবক | কোরআন গবেষক | শিক্ষাবিদ
প্রস্তাবনা
প্রফেসর ডা. মো. মতিয়ার রহমান বাংলাদেশের চিকিৎসা অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
তিনি ল্যাপারোস্কপিক যন্ত্রের মাধ্যমে পিত্তথলি পাথর অপারেশনের জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন।
একাধারে একজন দক্ষ চিকিৎসক, সমাজসেবক, শিক্ষাবিদ এবং কোরআন গবেষক হিসেবে তাঁর অবদান প্রশংসিত।
বর্তমানে তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান, ইনসাফ বারাকাহ কিডনী এন্ড জেনারেল হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, দি বারাকাহ ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান এবং কোরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
“চিকিৎসা মানুষের শরীরকে সুস্থ করে, আর কোরআনের জ্ঞান মানুষের আত্মাকে আলোকিত করে।” – প্রফেসর মতিয়ার রহমান
প্রারম্ভিক জীবন
প্রফেসর মতিয়ার রহমান খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার আরজি-ডুমুরিয়া গ্রামের এক ধার্মিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
শৈশবে তিনি গ্রামের কাওমী মাদরাসায় প্রাথমিক ইসলামী শিক্ষা লাভ করেন।
মাদরাসায় ছয় বছর পড়ার পর ডুমুরিয়া হাই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন।
১৯৬৮ সালে তিনি ডুমুরিয়া হাই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি এবং ১৯৭০ সালে খুলনার দৌলতপুর সরকারি বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন।
শিক্ষাজীবন
১৯৭৭ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
দ্বিতীয় ও ফাইনাল প্রফেশনাল এমবিবিএস পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাক্রমে ষষ্ঠ ও দশম স্থান অধিকার করেন।
এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ইংল্যান্ডে যান এবং ১৯৮৬ সালে গ্লাসগো রয়েল কলেজ অব ফিজিসিয়ানস এন্ড সার্জনস থেকে সার্জারিতে এফআরসিএস ডিগ্রী অর্জন করেন।
“মেডিকেল সায়েন্স শুধু চিকিৎসার জন্য নয়, কোরআন বোঝার ক্ষেত্রেও সহায়ক।” – প্রফেসর মতিয়ার রহমান
কর্মজীবন
১৯৭৯ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদানের পর তিনি ইরাকে চার বছর সার্জারি বিভাগে কাজ করেন।
পরবর্তীতে দেশে ফিরে এসে ১৯৮৮ সালে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট হিসেবে যোগদান করেন।
পরে তিনি প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধানের পদে উন্নীত হন।
আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা
চাকরি ও উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ইরাক, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে কাজ করেছেন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে বিশ্বমানের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
চিন্তাধারা
প্রফেসর মতিয়ার রহমান বিশ্বাস করেন, ইসলামের জ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞানকে একসাথে সমন্বয় করলে মানুষ সঠিকভাবে আল্লাহর কিতাবকে বুঝতে সক্ষম হবে।
তিনি মনে করেন, যেমন এসএসসি ও এইচএসসি স্তরে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত পড়ানো হয়, তেমনি মেডিকেল সায়েন্স সম্পর্কেও প্রাথমিক শিক্ষা সবার জন্য প্রয়োজন।
কোরআন গবেষণা ও লেখালেখি
চিকিৎসক হয়েও তিনি কোরআন গবেষণায় বিশেষ অবদান রেখেছেন।
এখন পর্যন্ত তাঁর লেখা গবেষণাধর্মী গ্রন্থের সংখ্যা ৩৩টি।
তাঁর রচনায় বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও কোরআনের গভীর তাৎপর্য ফুটে উঠেছে।
প্রসিদ্ধ গ্রন্থাবলি
- মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে?
- মুমিনের এক নম্বর কাজ এবং শয়তানের এক নম্বর কাজ
- আল্লাহর ইচ্ছায় সবকিছু হয় কথাটির প্রকৃত ব্যাখ্যা
- তাকদীর (ভাগ্য!) পূর্বনির্ধারিত তথ্যটির প্রচলিত ও প্রকৃত ব্যাখ্যা
- Common sense -এর গুরুত্ব কতটুকু এবং কেন
- অমুসলিম পরিবার ও সমাজে মানুষের অজানা মুমিন ও বেহেশতী ব্যক্তি আছে কি?
এছাড়া তিনি “আল কোরআন যুগের জ্ঞানের আলোকে অনুবাদ” গ্রন্থের প্রধান সম্পাদক।
এটি কোরআন অনুবাদের এক অভিনব প্রচেষ্টা, যা বৈজ্ঞানিক যুগের আলোকে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
“কোরআন গবেষণায় ডা. মতিয়ার রহমানের অবদান সমকালীন ইসলামী চিন্তায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।” – সমালোচক মতামত
সামাজিক অবদান
চিকিৎসা ও গবেষণার পাশাপাশি তিনি সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়।
ইনসাফ বারাকাহ কিডনী এন্ড জেনারেল হাসপাতাল ও দি বারাকাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অসহায় মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন।
এছাড়া কোরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে কোরআনমুখী শিক্ষা প্রদানে নিরলস কাজ করছেন।
উপসংহার
প্রফেসর ডা. মো. মতিয়ার রহমান কেবল একজন সার্জন নন, তিনি আধুনিক চিকিৎসা ও ইসলামী জ্ঞানের সমন্বয় সাধনকারী এক অনন্য ব্যক্তিত্ব।
চিকিৎসা, শিক্ষা, গবেষণা ও সমাজসেবায় তাঁর অবদান বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সমাদৃত।
তাঁর জীবন ও কর্ম প্রমাণ করে, জ্ঞান ও মানবসেবা একইসাথে চর্চা করা সম্ভব।
তাঁর অবদান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
আরও পড়ুন
👉 ঢাকা মেডিকেল কলেজ
👉 চিকিৎসা বিষয়ক বই
📚 মোঃ মতিয়ার রহমান এর বইসমূহ
প্রফেসর ডঃ মোঃ মতিয়ার রহমান কর্তৃক রচিত ইসলামিক pdf বই ডাউনলোড করতে নিচের নামের উপর ক্লিক করুন।
১। অন্ধ অনুসরণ
২। অমুসলিম সমাজ বা পরিবারে মানুষের অজানা মু’মিন ও বেহেশতী ব্যাক্তি আছে কিনা
৩। অযু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করলে গুনাহ হবে কি
৪। আল-কুরআনের গঠন পদ্ধতি
৫। আল কুরআনে রহিত (মানসুখ) আয়াত আছে প্রচলিত এ কথাটি কি সঠিক
৬। আল্লাহ ইচ্ছায় সবকিছু হয় তথ্যটির প্রচলিত ও প্রকৃত ব্যাখ্যা
৭। ইচ্ছাকৃতভাবে অর্থ না বুঝে কুরআন পড়া সওয়াব না গুনাহ
৮। ইবাদাত কবুলের শর্তসমূহ
৯। ইসলামী বক্তব্য লেকচার বা ওয়াজ উপস্থাপনের ফর্মূলা
১০। ইসলামের নির্ভুল জ্ঞান অর্জনের জন্যে কুরআন হাদীস ও বিবেক-বুদ্ধি ব্যবহারের ফর্মুলা
১১। ইসলামের মৌলিক বিষয় এবং গুরুত্বপূর্ণ হাদীস নির্ণয়ের সহজতম উপায়
১২। ঈমান থাকলেই বেহেশত পাওয়া যাবে
১৩। কুরআনের তাফসীর করা বা তাফসীর পড়ে সঠিক জ্ঞানের অর্জনের মূলনীতি
১৪। গুনাহের সংজ্ঞা ও শ্রেণী বিভাগ
১৫। তাকদীর পূর্ব নির্ধারিত তথ্যটির প্রচলিত ও প্রকৃত ব্যাখ্যা
১৬। নবী রাসুল সা. প্ররেণের উদ্দেশ্য এবং তাঁদের সঠিক অনুসরণের মাপকাঠি
১৭। নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
১৮। বিবেক-বুদ্ধি অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গত ও কল্যাণকর আইন কোনটি
১৯। বিবেক-বুদ্ধির গুরত্ব কতটুকু এবং কেন
২০। মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য
২১। মুমিন ও কাফিরের সজ্ঞা এবং শ্রেণী বিভাগ
২২। মুমিনের এক নাম্বার কাজ এবং শয়তানের এক নাম্বার কাজ
২৩। মৃত্যুর সময় ও কারণ পূর্ব নির্ধারিত তথ্যটির প্রচলিত ও প্রকৃত ব্যাখ্যা
২৪। যিকিরঃ প্রচলিত ধারণা ও সঠিক চিত্র
২৫। শাফায়াত দ্বারা কবীরা গুনাহ বা দোযখ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে কি
২৬। শিরক সবচেয়ে বড় গুনাহ কথাটি কি সঠিক
২৭। সওয়াব ও গুনাহ মাপার পদ্ধতি