ড. আহমদ আলী: Dr. Ahmod Ali Books

✍️ বিশিষ্ট ইসলামি শিক্ষাবিদ | গবেষক | লেখক | দাওয়াতি ব্যক্তিত্ব

প্রস্তাবনা

প্রফেসর ড. আহমদ আলী দক্ষিণ চট্টগ্রামের এক প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ ও গবেষক।
তিনি জ্ঞানচর্চা, ইসলামি চিন্তা ও সমাজ সংস্কারে নিবেদিত এক আলোকিত ব্যক্তিত্ব।
দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি শিক্ষকতা, গবেষণা ও লেখালেখির মাধ্যমে ইসলামের শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।
তাঁর রচনাবলী, বক্তৃতা ও একাডেমিক অবদান বাংলাদেশের ইসলামি শিক্ষা ও চিন্তাধারাকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

“জ্ঞান শুধু মুখস্থ করার বিষয় নয়, বরং তা মানুষকে আলোর পথে পরিচালিত করার এক মহান উপকরণ।” – প্রফেসর ড. আহমদ আলী

প্রারম্ভিক জীবন

প্রফেসর ড. আহমদ আলী চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান গ্রামের এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতা ছিলেন হাজী ফযল করিম এবং মাতা সারা খাতুন।
তিনি প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের ভগ্নিপতি।
শৈশব থেকেই ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে ওঠা এই জ্ঞানপিপাসু ব্যক্তিত্ব অল্প বয়সেই ইসলাম ও সাহিত্যপ্রেমে অনুপ্রাণিত হন।

শিক্ষাজীবন

ড. আহমদ আলীর শিক্ষা জীবন এক অনুকরণীয় অধ্যায়।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ থেকে ১৯৮৯ সালে অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট, ১৯৯০ সালে মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট এবং ২০০২ সালে পিএইচডি অর্জন করেন।
একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত দ্বীনি প্রতিষ্ঠান চুনতী হাকিমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ১৯৮৭ সালে কামিল পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জন করেন।
২০০৭ সালে তিনি সৌদি আরবের কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর ডিপ্লোমা অর্জন করেন, যা তাঁর আন্তর্জাতিক একাডেমিক দক্ষতার প্রতীক।

“শিক্ষার উদ্দেশ্য শুধু সার্টিফিকেট অর্জন নয়; বরং তা আত্মিক পরিশুদ্ধি ও মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকা।” – আহমদ আলী

কর্মজীবন

ড. আহমদ আলী ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন তীক্ষ্ণ মেধাবী ও আদর্শবাদী।
তাঁর পেশাগত জীবন শুরু হয় চুনতী হাকিমিয়া আলিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে।
১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে মুহাদ্দিস ও উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন

১৯৯৬ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।
পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে সহকারী অধ্যাপক, ২০০৩ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০০৮ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক সফল চেয়ারম্যান হিসেবে একাডেমিক উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা রাখেন।
বর্তমানে তিনি একই বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

অন্য প্রতিষ্ঠানে অবদান

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম আলিয়া মাদরাসায় তিনি পার্ট-টাইম মুহাদ্দিস হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগেও তিনি প্রফেসর পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তাঁর একাডেমিক তত্ত্বাবধানে বহু শিক্ষার্থী গবেষণায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন এবং ইসলামি চিন্তায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।

রচনাবলী

প্রফেসর আহমদ আলী একজন উর্বর লেখক ও গবেষক।
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন একাডেমিক জার্নাল ও ইসলামি ম্যাগাজিনে তাঁর গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
এছাড়া তিনি রচনা করেছেন বহু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ, যেগুলো ইসলামি সমাজব্যবস্থা, আইন, সাহিত্য ও নৈতিকতার দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

প্রসিদ্ধ গ্রন্থাবলি

  • মুসলিম লিপিকলা: উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ
  • বিদআত (১-৬ খণ্ড)
  • ইসলামের শাস্তি আইন
  • ইসমাতুল আম্বিয়া
  • গণতন্ত্র: ইসলামি দৃষ্টিকোণ
  • সার্বভৌমত্ব: ইসলামি দৃষ্টিকোণ
  • ইসলামের দৃষ্টিতে পোশাক, পর্দা ও সাজসজ্জা
  • ইসলামের আলোকে বাসস্থানের অধিকার ও নিরাপত্তা
  • তাযকিয়াতুন নাফস
  • আধুনিক আরবি কাব্য সাহিত্যের ইতিহাস
  • খলীফাতুর রাসূল আবু বকর আস-সিদ্দিক (রা.)
  • ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদা
  • জঙ্গিবাদের উত্থান বনাম ইসলামের শাশ্বত শিক্ষা
  • তাসাউফের স্বরূপ
  • নামাজে চেয়ার ব্যবহার

“ড. আহমদ আলীর লেখনিতে ইসলামী আদর্শ ও আধুনিক চিন্তার এক সুন্দর সমন্বয় পরিলক্ষিত হয়।” – সমালোচক মতামত

অপ্রকাশিত গ্রন্থ

  • বিদআত (৭ম ও ৮ম খণ্ড)
  • সালাতুত তারাবীহ

চিন্তাধারা ও প্রভাব

ড. আহমদ আলী ইসলামকে কেবল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং পূর্ণ জীবনব্যবস্থা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
তাঁর চিন্তাধারায় নৈতিকতা, জ্ঞানচর্চা ও সমাজকল্যাণের সমন্বয় দেখা যায়।
তিনি বিশ্বাস করতেন, ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে সমাজে শান্তি, ন্যায় ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
তাঁর ছাত্র, সহকর্মী ও পাঠকগণ তাঁর আদর্শকে এখনো অনুসরণ করছেন।

উপসংহার

প্রফেসর ড. আহমদ আলী আধুনিক বাংলাদেশের ইসলামি শিক্ষা, সাহিত্য ও গবেষণাক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
তিনি প্রমাণ করেছেন, জ্ঞান, চরিত্র ও দাওয়াতি প্রেরণার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব।
তাঁর জীবন ও কর্ম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দিকনির্দেশনা হয়ে থাকবে।

“যিনি জ্ঞানের আলোয় নিজেকে আলোকিত করেন, তিনিই প্রকৃত অর্থে সমাজকে আলোকিত করতে পারেন।”

আরও পড়ুন

👉 চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
👉 ইসলামিক বই সমাহার


error: Content is protected !!
Scroll to Top