ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর: Dr. Khondoker Abdullah Jahangir Books

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর কর্তৃক রচিত pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে বইয়ের নামের উপর ক্লিক করুন।

১। আল ফিকহুল আকবার
২। আল মউযুআত
৩। আল্লাহর পথে দাওয়াত
৪। ইসলামী আকীদা
৫। ইসলামে পর্দা
৬। ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ
৭। ঈদ ই মিলাদুন্নবী প্রবর্তন ও প্রবর্তকঃ একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনা
৮। উশর বা ফসলের যাকাত
৯। এহইয়াউস সুনান বা সুন্নাতের পুনরুজ্জীবন ও বিদআতের বিসর্জন
১০। কিতাবুল মোকাদ্দস ইঞ্জিল শরীফ ঈসায়ী ধর্ম
১১। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা

১২। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে পোশাক পর্দা ও দেহসজ্জা
১৩। কুরবানী ও জাবীহুল্লাহ
১৪। খুতবাতুল ইসলাম
১৫। জিজ্ঞাসা ও জবাব
১৬। পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা
১৭। মুনাজাত ও নামায
১৮। রাহে বেলায়াত ও রাসুলুল্লাহর সাঃ যিকির-ওযীফা
১৯। শবে-বরাত ফযীলত ও আমল
২০। সহীহ মাসনূন ওযীফা
২১। সালাতের মধ্যে হাত বাঁধার বিধান
২২। হাদীসের নামে জালিয়াতিঃ প্রচলিত মিথ্যা হাদীস ভিত্তিহীন কথা

✍️ ইসলামিক চিন্তাবিদ | গবেষক | শিক্ষক | দাঈ

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (১৯৬১–২০১৬) বাংলাদেশের ইসলামি চিন্তাধারা, দাওয়াহ, গবেষণা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃত। তিনি একজন সত্যসন্ধানী গবেষক, প্রমাণভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির লেখক এবং প্রচারমাধ্যমে ইসলামের সঠিক বার্তা উপস্থাপনে অগ্রগামী ছিলেন। তাঁর কর্মময় জীবন ছিল ইসলামি জ্ঞানচর্চা, গবেষণা, শিক্ষাদান এবং সমাজসংস্কারের প্রতি নিবেদিত। তাঁর অসংখ্য বক্তৃতা, বই এবং ক্লাস আজও তরুণ প্রজন্মকে সঠিক পথে গাইড করে।

“সত্যের অনুসন্ধান করতে হলে কুরআন ও সহীহ হাদীসের দিকে ফিরে আসতে হবে—এটাই আমাদের মুক্তির পথ।” – ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

প্রারম্ভিক জীবন ও পরিবার

ড. জাহাঙ্গীর ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদাহ জেলার ধোপাঘাটের গোবিন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা খোন্দকার আনোয়ারুজ্জামান ও মাতা বেগম লুৎফুন নাহার ধর্মপরায়ণ ও শিক্ষানুরাগী পরিবার পরিবেশে সন্তানদের বড় করে তোলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ধর্মীয় বই পড়তে, প্রশ্ন করতে এবং জ্ঞান অর্জনে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করতেন। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর ধর্মীয় শিক্ষায় আরও মনোনিবেশ করেন। অল্প বয়সেই তাঁর কণ্ঠস্বর, বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ এবং জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ তাঁকে আলাদা পরিচিতি এনে দেয়।

শিক্ষাজীবন ও উচ্চতর গবেষণা

ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল সম্পন্ন করার পর তিনি হাদীস শাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের রিয়াদের বিখ্যাত মুহাম্মাদ বিন সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি অনার্স, মাস্টার্স এবং পরবর্তীতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর গবেষণার বিশেষত্ব ছিল সমসাময়িক বিষয়কে হাদীস ও কুরআনের আলোকে বিশ্লেষণ করা।
বিদেশে অবস্থানকালে তিনি আরবি ভাষা, গবেষণা পদ্ধতি এবং ইসলামী জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন।

অধ্যাপনা ও শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান

১৯৯৮ সালে দেশে ফিরে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। দক্ষতা, জ্ঞানভাণ্ডার ও গবেষণার মানের কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সেরা শিক্ষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। পরে ২০০৯ সালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন।
এছাড়া ঢাকার দারুসসালাম মাদরাসায় খণ্ডকালীন শায়খুল হাদীস হিসেবে বুখারী শরীফ পড়াতেন। তাঁর ক্লাস হতো যুক্তিবাদী, প্রমাণনির্ভর এবং সহজবোধ্য। শিক্ষার্থীরা বলতেন যে, তাঁর ব্যাখ্যা একজন মানুষকে আমলি মুসলিম থেকে চিন্তাশীল মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলে।

দাওয়াহ, মিডিয়া উপস্থিতি ও সামাজিক কার্যক্রম

ড. জাহাঙ্গীর দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ, সেমিনার ও দাওয়াহ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতেন। তিনি সাধারণ মানুষের সামনে ইসলামকে যুক্তি, প্রমাণ এবং বাস্তব উদাহরণ দিয়ে তুলে ধরতেন। টেলিভিশন ও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তাঁর আলোচনাগুলো দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়।
সমাজ সংস্কার, আকীদা সংশোধন, কুসংস্কার দূরীকরণ এবং মুসলিমদের মধ্যে প্রজ্ঞামূলক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রচনাবলী ও সাহিত্যিক অবদান

ড. জাহাঙ্গীর আরবি, বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় বহু বই লিখেছেন। তাঁর রচনায় ছিল গভীর বিশ্লেষণ, প্রমাণনির্ভর যুক্তি এবং পাঠকের উপযোগী উপস্থাপন।
বাংলা ভাষায় তাঁর লেখা বইগুলো সাধারণ পাঠক থেকে শুরু করে আলেম সমাজ—সবার কাছেই সমাদৃত। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে আদাবুল হাদীস, গাইডেন্স ফর ফাস্টিং মুসলিমস, থ্রি ফান্ডামেন্টালস অব ইসলাম-এর সারাংশসহ আরও বহু মূল্যবান গ্রন্থ।
তাঁর বইগুলোতে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা, আকীদার বিশুদ্ধতা, শিরক-বিদআত থেকে বাঁচার উপায়সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ে গবেষণাধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায়।

চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গি

তিনি বিশ্বাস করতেন, ইসলাম শুধুমাত্র আচার-অনুষ্ঠানের ধর্ম নয়; বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। তিনি সর্বদা কুরআন ও সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে ইসলামের ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতেন।
তাঁর চিন্তাধারার মূল শক্তি ছিল—প্রমাণের প্রতি অটল থাকা, যুক্তি দিয়ে ভুল ধারণা দূর করা এবং জ্ঞানচর্চাকে উৎসাহিত করা।

“মানুষ যখন আল্লাহর বাণী থেকে দূরে সরে যায়, তখন বিভ্রান্তি তাকে আচ্ছন্ন করে। আর জ্ঞানই পারে সেই অন্ধকার দূর করতে।” – ড. জাহাঙ্গীর

মৃত্যু ও উত্তরাধিকার

২০১৬ সালের ১১ মে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু দেশের ইসলামপ্রেমী মানুষকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে দেয়। একজন চিন্তাশীল আলেম, গবেষক, শিক্ষক ও সমাজসংস্কারকের মৃত্যুতে বাংলাদেশের জ্ঞানজগতে অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়।
তাঁর রেখে যাওয়া বই, বক্তৃতা এবং চিন্তাধারা আজও লাখো মুসলিমের মাঝে সঠিক ইসলামি জ্ঞান ছড়িয়ে দিচ্ছে। তরুণদের মাঝে আকীদার বিশুদ্ধতা এবং বাস্তবমুখী ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে তাঁর অবদান আজও অম্লান।
আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন — আমিন।

আরও পড়ুন

👉 দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
👉 আসাদুল্লাহ আল গালিব

সংগ্রহ: বইগুলি আপনার ভালো লাগলে দয়াকরে নিকটবর্তী লাইব্রেরী থেকে ক্রয় করুন।
আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ 💚

error: Content is protected !!
Scroll to Top