মোশারাফ হোসেন খান: Mosharrof Hossain Khan Books

Mosharrof Hossain Khan
 মোশারাফ হোসেন খান কর্তৃক রচিত ইসলামিক pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে নামের উপর ক্লিক করুন।
লেখক পরিচিতিঃ

কবি মোশাররফ হোসেন খান জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৭ সালের ২৪শে আগস্ট একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবারে। তাঁর জন্মস্থান-যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার অন্তর্গত কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত বাঁকড়া গ্রামে। পিতা-ডা.এম.এ. ওয়াজেদ খান এবং মাতা-বেগম কুলসুম ওয়াজেদ।

তিনি ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য পত্রিকা-মাসিক ‘নতুন কলম’ ও মাসিক ‘নতুন কিশোরকণ্ঠের’ সম্পাদক।
কবিতা, গল্প, ছড়া, উপন্যাস, কিশোরতোষ ও সম্পাদনাসহ এ পর্যন্ত তাঁর আশির অধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে মুসলিম অবদান’সহ তিনি সম্পাদনা করেছেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ ও সংকলন। অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং পাঠকনন্দিত আধুনিক কবি হিসাবে তিনি পরিচিত।
তাঁর বিখ্যাত ও বহুল পঠিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে-‘হৃদয় দিয়ে আগুন’, ‘নেচে ওঠা সমুদ্র’, ‘বিরল বাতাসের টানে’, ‘পাথরে পারদ জ্বলে’, ‘সবুজ পৃথিবীর কম্পন’, ‘দাহন বেলায়’, ‘স্বপ্নের সানুদেশ’, ‘পিতার পাঠশালা’, ‘বৃষ্টি ছুঁয়েছে মনের মৃত্তিকা’, ‘ক্রীতদাসের চোখ’, ‘কবিতাসমগ্র’-১ প্রভৃতি।

কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি এ পর্যন্ত বেশ কিছু পুরস্কার, পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

দেশের প্রতি রয়েছে অগাধ ভালোবাসা কবি মোশাররফের। কবি মোশাররফের লেখায় কবিত্ব শক্তির যে ঐশী ব্যঞ্জনা ধ্বনিত হয় তা সাধারণ লেখকের পক্ষে ধরে রাখা কষ্টসাধ্য। তার পরও বলতে হয় তিনি একজন সর্বজনীন কবি। সাধারণ কবিদের সীমানার গণ্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক সীমানায় তার শক্তিশালী কলমকে তিনি মেলে ধরেছেন। বাংলাদেশের কবিদের মধ্যে তার অবস্থান হলেও এই অবস্থানের মধ্যে তার কবি প্রতিভা সীমিত নয়। তার সংবেদনশীল কবি মন। অনুভবের পথে হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়ান নীল দিগন্তের সীমানায়। তার কবিতার চারণভূমি দেখলে মনে হয় তিনি অনুভবের পথে হাঁটতে হাঁটতে বৈরী বাতাসকে জয় করেছেন। শিল্পমনস্কতায়, মননের দৃঢ়তায়, সুরের ইন্দ্রজাল সৃষ্টি করেছেন ।

কপট সময়ের সব মিথ্যা কপটতাকে দূরে রেখে মনের সুষমাকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। কবি মোশাররফ তার মনের সারল্য, সৌন্দর্য ও অনুভবের গভীরতা দিয়ে তিনি বিশ্ব ভুবনকে হাতের মুঠোয় তুলে ধরেছেন। তার লেখায় মা, মানুষ, প্রকৃতি, ধর্ম, নবীপ্রেম ও আধ্যাত্মিক সচেতনতা সহজেই চোখে পড়ে।

তার ছোট ভাই লেখক হেলাল আনোয়ারের কবিতার কালপুরুষ নামে মোশাররফ হোসেন খানের ওপর লেখা বইটি পড়ে, অনুধাবন করলে পাঠক মাত্রই তা অনুভব করতে পারবে। নিষ্পেষিত মানুষের মুক্তি, দ্রোহের অনির্বাণ শিখা আছে তার কবিতায়। আছে দুঃখ, লাঞ্ছনা, বিপ্লব ও সংগ্রামের কথা। তার সাহিত্যে যেমন মানবপ্রেম আছে, অধ্যাত্ম্যবোধ, ঐতিহ্যবোধ আছে তেমনি ঘৃণাবোধও আছে। তিনি একজন মহৎ কবি। তার ভাব বৈচিত্র্য, বিষয়বস্তু, উপস্থাপনার কলাকৌশল প্রয়োগ পাঠকদের মুগ্ধ করে। তিনি শিশু-কিশোরদের বই সম্পাদনায় বিরল ভূমিকা রেখেছেন। অবিশ্বাস্য পরিশ্রম ও একাগ্রতা দিয়ে তিনি লিখেন। তার কবিতাকে তার বসতঘর আখ্যা দেয়া যায়।
আশির দশকের একজন শক্তিমান কবি তিনি। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ- সব শাখাতেই তার অবাধ বিচরণ রয়েছে। তিনি একজন সংবেদনশীল সম্পাদকও বটে। আশির দশক থেকে কবিতা, উপন্যাস, গদ্যসাহিত্য, শিশুসাহিত্য, গল্প, ছড়া ও নানা অনুষঙ্গ নিয়ে নিরলস তিনি লিখে যাচ্ছেন। তিনি অতি সূক্ষ্ম বিষয়গুলো তার সাহিত্যকর্মে তুলে ধরেছেন। তিনি তার কল্পনায়, জনজীবন, স্বদেশপ্রেম, প্রকৃতি শিশু ও কিশোর ভাবনা অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। তার প্রিয় জন্মভূমির সবুজ প্রকৃতি, নদ-নদী পাখির কলকাকলি, সমুদ্র-পর্বত ও জনপদ নিখুঁতভাবে তার লেখনীতে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি আকাশচারী নন, তার কাব্যসাহিত্যে জীবনের জয়গান আছে, আছে দেশ-কাল-পাত্রভেদ ব্যতিরেকে পৃথিবীর সব মানুষের জন্য সীমাহীন মমতা। সাহসী মানুষের গল্প, গদ্যসাহিত্যের ক্ষেত্রে তাকে খ্যাতির দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছে।
ছোটদের বিশ্বনবী তার একটি অনন্য জীবনী গ্রন্থ।

বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় (আরবি, উর্দু, ফারসি, হিন্দি, ইংরেজি) তার গল্প ও কবিতা অনূদিত হচ্ছে। তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য জীবনমুখী গদ্যসাহিত্য। মাঝে মাঝে তার কবিতা পড়লে মনে হয়, কবির মনটা যেন আদিগন্ত মায়াবী সবুজের চারণভূমি। এই কবির গ্রন্থপঞ্জির সংখ্যা দেখলে বিস্মিত হই, তিনি লিখেছেন কবিতা, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, জীবনী গ্রন্থ, কিশোর উপন্যাস। বহু পুরস্কারে তিনি সম্মানিত, তার সাহিত্য জগৎ আলোকিত। বহু সাহিত্যিক, জ্ঞানী, গুণী প্রাজ্ঞ, দার্শনিক, সুধিজন তার গুণমুগ্ধ পাঠক। জীবনের জয়গান, প্রেমের উদ্দীপনা, যৌবনের প্রাণময়তা তার কবিতার ছত্রে ছত্রে ধরা পড়ে। তার কবিতার মধ্যে গোটা বাংলাদেশের স্বপ্ন থাকে।
কবি মোশাররফ হোসেন শিশু-কিশোর লেখক ও পাঠক তৈরির দক্ষ কারিগর। ছোটদের বহু বইয়ের সম্পাদক তিনি। শিশু-কিশোরদের মনের জগৎকে আলোকিত, পরিমার্জিত, পরিবর্ধিত ও বিকশিত করার কাজে এই কবির সাহসী ভূমিকা প্রশংসনীয়। মা, মাতৃভাষা, মাতৃভূমিকে মনের গহীনে তিনি লালন করে যাচ্ছেন অনুপম অনুরাগে। মাতৃভূমি, মাতৃভাষা কবিকে মোহমুগ্ধ করে রেখেছে। তার জাগ্রত বর্ণমালা ঐশ্বর্যমণ্ডিত ভাষায়, শতরূপা মায়ের ভাষায় গান গায়।

শিশু-কিশোরদের মনের জগৎ নিয়ে তিনি পথ চলেন। তাদের লেখা নিয়ে তার রয়েছে স্বপ্নপুরী। অনেক কবি সাহিত্যিক বাংলাদেশের ছোটদের নিয়ে অনেক লিখলেও তার মতো বিরল লেখক খুব কমই আছে। ধীর স্থিরভাবে বিভিন্ন রঙে রাঙিয়ে পাঠকদের তিনি জয় করেন। তার চিন্তা, চেতনা, অনুভূতি কিশোরদের হাতে তুলে দেন কলমের ছোঁয়ায়।

বাংলাদেশের লেখক ও পাঠকরা এই লেখকের লেখার জাদুকরী স্পর্শকে ভালোবাসে। ভালোবাসে তার কলমের মোলায়েম স্পর্শ। তার ভাষায় প্রাণের স্পর্শ অনুভব করে। সমস্ত বাংলাদেশের পটভূমি তার কবিতার আঁকে বাঁকে সবুজের গান গায়। কবি মোশাররফ খানের সাহিত্য জগৎ এত বিস্তৃত যে, আমার মতো ক্ষুদ্র পাঠক তার পরিসরকে মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। ৬৫ বছর বয়সী কবির মনের ভুবন এত রঙের বাহারে শোভাময় এবং বিচিত্র অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ, বাহারি জ্ঞান গরিমায় উজ্জ্বল। মনের তাগিদে এই কবির প্রাণ ঐশ্বর্যকে সবার কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে আমার সামান্য প্রচেষ্টা মাত্র। নানান কবিরা তাকে নানান নাম দিয়ে আখ্যায়িত করেছেন, কেউ বলেছেন ধ্রুবতারা, কেউ বলেছেন সপ্তরাঙা, কেউ বলেছেন উজ্জ্বল কবি, কেউ বা বলেছেন কবিতাওয়ালা, কেউ বা আত্মজা। আমি কবিদের লেখা এই সব উপাধিমালায় যাব না। শুধু আমার উপলব্ধিটুকু বলব- তিনি একজন নীরব সাধক। ক্ষুদ্রতা, নীচতা, সঙ্কীর্ণতা তার কবিতার শরীরে কোথাও চোখে পড়ে না। শিল্পীর চেয়ে শিল্প বড়। আবার শিল্পের চেয়ে মানুষ বড়। তাই আমি বলব কবি ভাই মোশাররফ হোসেন খানকে আমরা তার কবিতা পরিমাপ করতে পারি না, কেননা তিনি তার কবিতা থেকেও মহৎ সৃষ্টি।

আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ
error: Content is protected !!
Scroll to Top