ড. আবদুল্লাহ আযযাম: Dr. Abdullah Azzam Books

Dr. Abdullah Azzam Books

ড. আবদুল্লাহ আযযাম কর্তৃক রচিত ইসলামী pdf বই ডাউনলোড করতে নিচে নামের উপর ক্লিক করুন।
১। আফগানিস্তানে আমার দেখা আল্লাহর নিদর্শন
২। আল্লাহর সাথে সততা
৩। কারা জান্নাতী কুমারীদের ভালবাসে
৪। তাওহীদ আল আমালী
৫। তাফসীরে সুরা তওবা
৬। পাশ্চাত্য ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র
৭। ফিলিস্তিনের স্মৃতি
৮। মুসলিম ভূমির প্রতিরক্ষা
৯। মুসলিমদের ভূমিকে রক্ষা করা
১৯। যুবক ভাইদের প্রতি বিশেষ বার্তা
১১। লাল কর্কট
১২। সিরাত থেকে শিক্ষা

লেখক পরিচিতিঃ

ড. আব্দুল্লাহ আযযাম রাহিমাহুল্লাহ ফিলিস্তিনের জেনিন প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। আব্দুল্লাহ আযযাম এক ব্যতিক্রমধর্মী কিশোর। সদা গম্ভীর, নিষ্ঠাবান, চিন্তায় ডুবে থাকা এক কিশোর। নিয়মানুবর্তিতা, সময়ানুবর্তিতা তার চরিত্রকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। অল্প বয়সেই তিনি দাওয়াতের কাজ শুরু করেন। ইসলামী চিন্তা-চেতনাকে মুসলমানদের মাঝে জাগ্রত করতে পেরেশান হয়ে পড়েন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থায়ই তার অসাধারণ গুণাবলী দেখে শিক্ষকরা হতবাক হয়ে যান। তারা ভাবতে থাকেন, আমাদের এ সন্তান কালের ব্যবধানে নিশ্চয় বড় কিছু হবে। হয়তো আল্লাহ তার দ্বারা ইসলামের সংস্বারের কাজ নিবেন। সুনামের সাথেই তিনি লেখাপড়া করতে থাকেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের লেখাপড়া সুনামের সাথেই শেষ করেন। কাসে সবার চেয়ে ছোট হওয়া সত্তেও তিনি সবচেয়ে বেশী সুদর্শন ও মেধাবী ছিলেন। এরপর তিনি এগ্রিকালচার কাদরী কলেজে ভর্তি হন। এবং সেখান থেকেই ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন।

তারপর দক্ষিণ জর্দানের আদ্দির নামক গ্রামে শিকতা পেশায় যোগদান করেন। কিন্তু তার পিপাসার্ত মন তখনো ছিল অস্থির-উতলা। তাই দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে শরিয়াহ বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৬৬ সালে শরিয়াহ(ইসলামী আইন) এর উপর বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭১ সালে মিসরের আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ইসলামী আইন শাস্ত্রে মাস্টার্স ডিগ্রী এবং ইসলামি আইনের বিজ্ঞান ও দর্শন (উসূলুল ফিকহ) এর উপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে মিশরে অবস্থানকালে শহীদ সাইয়্যেদ কুতুব (রহ) এর (১৯০৬-১৯৬৬) পরিবারের খোঁজখবর নিতে যান। এরপর সৌদি আরবের বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা শুরু করেন এবং সেখানে কয়েক বছর শিক্ষকতা করার পর তিনি পাকিস্তানে ইসলামাবাদে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।

শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম একজন উত্তম চরিত্রের অধিকারি ব্যক্তি ছিলেন। ধর্মানুরাগ,আল্লাহর উপর নির্ভরশীলতা, সংযমশীলতা ছিল তার চারিত্রিক অলংকার। তিনি কখনো কারো সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করতেন না। তরুণদের তিনি ভিন্ন চোখে দেখতেন। তাদের কথা মনযোগ দিয়ে শুনতেন। সবধরনের ভয়-ভীতি মারিয়ে হৃদয়ের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করতে উদ্বুদ্ধ করতেন। তিনি নিয়মিত সিয়াম পালন করতেন। বিশেষ করে দাউদ আ.’এর সুন্নাহ অনুযায়ী অর্থাৎ একদিন সিয়াম পালন করতে একদিন বিরত থাকতেন। এভাবে তিনি সারা বছর সিয়াম পালন করতেন। বিশেষ করে সোমবার ও বৃহস্পতিবার তিনি সিয়াম পালন করতেন এবং অন্যদেরও এ দু’দিন সিয়াম পালন করতে উতসাহিত করতেন।

একদা এক দুঃখজনক ঘটনা ঘটল। পেশোয়ারে কিছু উগ্র স্বভাবের লোক ঘোষণা দিল, শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম কাফের হয়ে গেছে, কারন তিনি মুসলমানদের সম্পদ অপচয় করছেন।

শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম এ সংবাদ শুনে বিস্মিত হলেন না।ক্ষিপ্তও হলেন না। তাদের সাথে কোন রুঢ় আচরণও করলেন না; বরং তাদের জন্য কিছু উপহার সমগ্রি পাঠিয়ে দিলেন। এরপরও কিছু লোক বিরত হল না। তারা তার বিরুদ্ধে কটু কথা বলতে লাগল।অপবাদ ছড়াতে লাগল। শাইখ আযযাম র. তখনও কিছু বললেন না। বরং নিয়মিত তাদের নিকট উপহার সামগ্রী পাঠাতে লাগলেন। তারপর একসময় তাদের ভুল ভাঙল। তখন তারা বলতে লাগল,আল্লাহর কসম! আমরা কখনোই শাইখ আব্দুল্লাহ আযযামের মত মানুষ দেখিনি। তিনি আমাদের নিয়মিত অর্থ ও উপহার সামগ্রী দিয়ে যেত অথচ আমরা তার বিরুদ্ধে কটু কথা বলতাম।

পেশোয়ারে তিনি এক মসজিদে নিয়মিত জুমার নামায পড়াতেন। নামাযের আগে অগ্নিঝরা বক্তৃতা দিতেন। দূরদুরান্ত থেকে বহু মানুষ তার বক্তৃতা শুনতে ছুটে আসত। ১৯৮৯ সালে শত্রুরা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে তার মিম্বারের নিচে একটি শক্তিশালি টিএনটি বিস্ফোরক রেখে দিল। এটা এতোই ভয়াবহ ছিল যে তা বিস্ফোরিত হলে পুরো মসজিদটি ধ্বসে পরত।মসজিদের কেউ জীবিত থাকত না। কিন্তু আল্লাহর ফয়সালা ছিল ভিন্ন। তাই সেই বিস্ফোরকটি আল্লাহর হুকুমে আর বিস্ফোরিত হয়নি।

এ দিকে শত্রুরা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যেতে লাগলো। ১৯৮৯ সালের ২৪ শে নভেম্বর। শুক্রবার। শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম যে পথ দিয়ে জুমআর নামায আদায় করতে যেতেন সে পথে শত্রুরা তিনটি বোমা পুতে রাখল।রাস্তাটি ছিল সরু।একটির বেশি গাড়ি তা দিয়ে অতিক্রম করতে পারত না। দুপুর ১২.৩০ মিনিটে শাইখের গাড়িটি ঠিক বোমা যেখানে পুতে রাখা হয়েছিল সেখানে এসে বন্ধ হয়ে গেল। সে গাড়িতে ছিলেন শাইখ ও তার দুই ছেলে ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ। আর তাদের সাথে ছিলেন তার বন্ধু  তামিম আল আদনানির এক পুত্র। গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছে না দেখে শাইখ গাড়ি থেকে নেমে হাটা শুরু করলেন। আর তখনই বিকট শব্দ করে শত্রুদের পুতে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হল। বিস্ফোরণের ভয়াবহ আওয়াজে কেপে উঠল পুরো শহর। আতঙ্ক ছড়িয়ে পরল সর্বত্র। তারপরই মসজিদ ও আশপাশের মানুষরা দৌড়ে এল। তারা ছুটে এসে গাড়ির বিক্ষিপ্ত টুকরো ছাড়া আর কিছুই পেলনা। বিস্ফোরনের ফলে শাইখের দুই ছেলের দেহ ১০০ মিটার উপরে উঠে গিয়েছিল। তাদের দেহ বিভিন্ন গাছের ডালে বৈদ্যুতিক তারের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেল।কিন্তু আল্লাহ তা’আলা শহীদ শাইখ আব্দুল্লাহ আযযামের দেহকে রক্ষা করলেন।দেহটি সম্পূরণ অক্ষত অবস্থায় একটি দেয়ালের সাথে হেলান দেয়া অবস্থায় পাওয়া গেল। তখন তার মুখ দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল।

তার শাহাদাতের সংবাদে চারিদিকে শোকের ছায়া নেমে এলো। কান্নার রোল পড়ে গেল । এই ভাবে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে নিজের জীবন বিলিয়ে দিলেন তিনি । আল্লাহ তার এই ত্যাগকে কবুল করুক।আমিন।

আবার ভিজিট করবেন !!! ধন্যবাদ

error: Content is protected !!
Scroll to Top